ইনসাইড ডেস্ক: ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের পাশে আত্নীয়-স্বজনেরা শুধু লাশের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। কেউ কেউ আপনজন হারানোর বেদনায় ডুকরে কান্না করছেন। আবার কারও সারা দিনের ধকল, ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় কান্না যেন শুকিয়ে গেছে।
মর্গের পাশে মানুষের ভিড়ের মধ্যে মোবাইলে ফোন এলো রাহিমা বেগমের। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদলেন তিনি। রাহিমা বেগম মোবাইলের অপর প্রান্তের স্বজনের প্রশ্নের জবাবে বললেন, “লাশ কী, বস্তায় কইরা সব কয়লা আনছে। কারও লাশই নাকি চিনার উপায় নাই”। রাহিমা বেগম তার পুত্রবধূ আমেনা বেগমের (২২) লাশের অপেক্ষায় আছেন। ডিএনএ টেস্টের পর লাশ হস্তান্তর করা হবে। কিন্তু সেটা কখন, তা তারা জানেন না।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকার হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানার নছিলা ভবনের চারতলায় কাজ করতেন আমেনা বেগম। ৬ হাজার টাকা বেতনের চাকরি আমেনা বেগমের। তার স্বামী রাজীব হোসেন ও শ্বাশুড়ি রাহিমা বেগমও একই কারখানায় চাকরি করেন। তারা আলাদা ভবনে কাজ করায় প্রাণে বেঁচে গেছেন। স্বজনেরা জানান, আমেনা বেগম ৪ বছর ধরে ওই কারখানায় চাকরি করছিলেন। তারা পরিবারসহ কারখানা এলাকার পাশে ভাড়া বাসায় থাকেন। ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় তাদের বাড়ি।
শোকাহত রাহিমা বেগম এই বসছেন, দাঁড়াচ্ছেন, এদিক সেদিক পায়চারি করছেন, আর কিছুক্ষণ পরপর হঠাৎ বলে উঠছেন, “লাশ কী, সব তো আনছে কয়লা…।”