সময়মত কর্মস্থলে যোগ দিতে না পারলে চাকরি চলে যেতে পারে, এরকম অনেক ভাবনা থেকেই অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা আসছেন। ভোগান্তির পাশাপাশি গুনতে হচ্ছে তাদের বাড়তি ভাড়া। উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যে উধাও হয়ে গেছে স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক না পরেই, গাদাগাদি করে যানবাহনে উঠছে যাত্রীরা।
ঢাকার ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ইব্রাহিম মিয়া। তিনি এই কঠোর লকডাউনেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্ত্রী ও ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে আশুলিয়া যাওয়ার জন্য শনিবার সকাল ১০টায় অপেক্ষা করছিলেন নাগরপুর উপজেলার তালতলা বাসস্ট্যান্ডে। ইব্রাহিমের মত আরও শত শত মানুষ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে যেতে সারা দিন অপেক্ষায় করছেন এই বাসস্ট্যান্ডে।
করোনা ভাইরাস মহামারী রুখতে জারি হওয়া কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তাদের এই ভোগান্তি।
সকালে নাগরপুরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, বটতলা বাসস্ট্যান্ড, তালতলা বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ঢাকামুখী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। সেই সঙ্গে আষাঢ়ে বৃষ্টি তাদের ভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। ট্রাক, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও ভাড়ায় চালিত মটরসাইকেল—যে যেভাবে পারছেন ঢাকায় ফিরছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার নিজ গ্রামে ঈদ করতে গিয়েছিলেন ঢাকা আশুলিয়া এলাকার একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক দম্পতি নার্গিস আক্তার ও শিমুল মিয়া তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে।
নাগরপুর বটতলা বাসস্ট্যান্ডে গাড়ির অপেক্ষায় থাকার সময় শিমুল বলেন, “আমরা জানতাম লকডাউন শেষ হলে কারখানা খুলবে। হঠাৎ কারখানা খোলার সিদ্ধান্তে আমাদের হঠাৎ করেই রওনা হতে হচ্ছে। কিন্তু কোনো যানবাহন পাচ্ছি না। কয়েকটি মিনি ট্রাকে ওঠার চেষ্টা করেও সঙ্গে বাচ্চা ও ব্যাগ থাকায় উঠতে পারিনি। কী আর করব, চাকরি বাঁচাতে হলে যেভাবেই হোক যেতে হবে।”