করোনাকালীন সময়ে চলমান বিধিনিষেধে হাতে নেই কোনো কাজ,নেই খাবার ও পর্যাপ্ত টাকা। অন্য কোন উপায় না পেয়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই ৩০ টাকা দরে ওএমএস’র পাঁচ কেজি চাল কিনে বাড়িতে ফিরছিলেন হানিফ শেখ নামের এক দিনমজুর।
পথিমধ্যে অটোভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চালসহ রাস্তায় ছিটকে পড়েন ওই দিনমজুর। এতে করে চালে ময়লা লাগে যার ফলে তা খাবার অনুপোযোগী হয়ে যায়। এছাড়াও,পায়ে সামান্য আঘাত পান দিনমজুর হানিফ। পরে উপস্থিত জনতা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন এবং রাস্তায় পড়ে থাকা ময়লা লাগা চালগুলো পুনরায় ব্যাগে ভরার চেষ্টা করেন।
এ ঘটনাটি ঘটে রোববার (১ আগস্ট) দুপুরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার হলবাজার এলাকায়।
বিধিনিষেধে অভিযান শেষ করে কার্যালয়ে ফিরছিলেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মণ্ডল এ সময়। ঘটনাটি চোখে পড়তেই তিনি দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে ওই দিনমজুরের কাছে যান।তারপর গাড়িতে থাকা মেডিসিন দিয়ে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। সব কিছু দেখে-শুনে তিনি ওই দিনমজুরের হাতে তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের খাদ্যসহায়তার একটি বস্তা। এরপর একটি ভ্যান ঠিক করে ভাড়া দিয়ে তাকে বাড়িতে ফেরত পাঠান।
পৌরসভার খয়ের চারা এলাকার বাসিন্দা দিনমজুর হানিফ শেখ। তিনি বলেন, ‘লেবারের কাজ করি। লকডাউনে নাই কোন কাজ। ঘরে নাই তেমন টাকাও। পাঁচ কেজি ওএমএস’র চাল কিনে বাড়িতে ফিরছিলাম। সে সময় ভ্যানের ধাক্কায় চালসহ রাস্তায় ছিটকে পড়ে যাই। এতে চাল নষ্ট হয়ে যায় এবং আমার ডান পায়ের হাঁটুর অংশ কেটে যায়। এমন সময়ে একটি গাড়িতে ইউএনও স্যার আসলেন। তিনি আমার চিকিৎসা করলেন, খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সাহায্য করলেন। আবার ভাড়া দিয়ে ভ্যানে তুলে দিলেন।’
এ ব্যাপারে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মণ্ডল জানান, ‘একজন মানুষ হিসেবে বিপদে পড়া অন্য একজন মানুষকে সহযোগিতা করা দায়িত্ব এবং কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। আমি কেবল আমার দায়িত্ব পালন করেছি। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।’