পপি সাহার বয়স মাত্র সাত বছর। তার কানে ৩ আনা ওজনের দুটি স্বর্ণের দুল ছিল। দুলগুলোর লোভে পড়েন পাশের বাড়ির ভাড়াটিয়া রুমা আক্তার। হঠাৎ নিখোঁজ হয় পপি। আশপাশ ও সম্ভাব্য স্থানে খুঁজে কোথাও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এমন অবস্থায় স্থানীয়রা সিদ্ধান্ত নেন, সবার ঘরে তল্লাশি চালানো হবে।
এটা জানার পর রুমা ও তার স্বামী এমরান হোসেন পালানোর চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয়রা তাদের আটক করেন এবং তাদের ঘর তল্লাশি করে খাটের নিচে শিশু পপির মরদেহ দেখতে পান। পরে এ খুনি দম্পতিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে আটক করে এবং পপির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের সাগরদি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দম্পতিকে আটক করলেও দুলগুলো খুঁজে পায়নি পুলিশ।
নিহত পপি সাগরদি গ্রামের সৌদি প্রবাসী নির্মল সাহার মেয়ে। ২৫ দিন আগে নির্মল স্ত্রী-মেয়েকে রেখে চাকরির খোঁজে সৌদি-আরব যান। পপি সাগরদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
অভিযুক্ত এমরান গাছ কাটার শ্রমিক ও কেরোয়া ইউনিয়নের মীরগঞ্জ বাজার এলাকার বাসিন্দা। স্ত্রী রুমাকে নিয়ে দুই মাস ধরে তিনি সাগরদি গ্রামের কাতার প্রবাসী আবুল কাশেমের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে পপিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এতে আশপাশ এলাকা ও সম্ভাব্য সকল স্থানে পপিকে খোঁজ করা হয়। কোথাও না পেয়ে পার্শ্ববর্তী ঘরগুলোতে তল্লাশি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি জানতে পেরে পাশের বাড়ির ভাড়াটিয়া রুমা ও এমরান পালানোর চেষ্টা করেন। অবস্থা বুঝতে পেয়ে উপস্থিত লোকজন তাদেরকে আটক করেন। পরে তাদের ঘরে ঢুকে খাটের নিচে পপির মরদেহ দেখতে পান। পরে স্থানীয়রা তাদের বাড়ির সামনে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দেন।
স্থানীয়রা বলেন, পপিকে অন্যান্য স্থানে খোঁজ করার সময় রুমা ও এমরান অন্যদের মতো নিহতের মা ববিতার সঙ্গেই ছিলেন।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল জলিল গণমাধ্যমকে বলেন, শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক স্বামী-স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।