বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নেতাকর্মী,সমর্থক ও সাধারণ মানুষের অভ্যর্থনায় সিক্ত হয়ে কক্সবাজার পৌঁছেছেন। এর আগে গত শনিবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে গাড়িবহরে পথে পথে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হামলার কারণে রোববার ছিল বাড়তি সতর্কতা।প্রতিটি উপজেলার নেতাকর্মীরা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিয়ে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরকে নিজ নিজ এলাকা পার করে দিয়ে।
আজ সোমবার বেলা সোয়া ১২টায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস থেকে সড়ক পথে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের ১৭০ কিলোমিটারের পথে পথে হাজার হাজার নেতাকর্মী রাস্তার দুই ধারে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে করতালি ও স্লোগান দিয়ে তাদের নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানায়।
কক্সবাজার প্রবেশ পথ থেকে খালেদা জিয়ার গাড়ি মোটর শোভাযাত্রাসহকারে নেতাকর্মীরা সার্কিট হাউসে নিয়ে আসে। সার্কিট হাউসে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান,সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ, সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফর রহমান কাজল, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাজাহান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা স্বপ্নাসহ জেলা নেতারা তাকে অভ্যর্থনা জানান।
এদিকে গাড়িবহরে হামলার ঘটনা শুনে বিস্মিত ও অবাক হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। শনিবার নেতাদের কাছ থেকে হামলার বর্ণনা শুনে এ ধরনের হামলা কেন, কী উদ্দেশ্যে করা হয়েছে- তা নিয়ে আলোচনা করেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয় কী হতে পারে- সে ব্যাপারে তাদের মতামত নেন বলে সিনিয়র কয়েক নেতা জানান।
গত শনিবার হামলার পর ফেনী ও রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা জানতে চান। নেতারা হামলার পেছনে কারা জড়িত তাদের ব্যাপারে তথ্য জানান। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ঘটনার সঙ্গে ক্ষমতসীন দলের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা জড়িত।
চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস খালেদা জিয়ার বরাত দিয়ে বলেন, হামলার উদ্দেশ্য ছিল চেয়ারপারসনকে জনগণের কাছ থেকে আলাদা করা। তার পরও তিনি অনড়। জনগণের ভালোবাসা নিয়ে তিনি সব বাঁধা উপেক্ষা করে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখতে যাবেন।
সোমবার খালেদা জিয়া উখিয়ার বালুখালী-২,ময়নারগুনাসহ চারটি রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন ও তাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করবেন।
শনিবার ঢাকা থেকে সড়কপথে চট্টগ্রামে আসেন খালেদা জিয়া। চট্টগ্রাম আসার পথে বিকালে ফেনীতে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা হয়। এতে বহরের অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাংচুর এবং সাংবাদিকদের মারধর করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার গাড়িবহর চট্টগ্রাম থেকে রওনা দেয়ার আগে মহাসড়কের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে অগ্রবর্তী হিসেবে রওনা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাজাহান,সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম আজাদ ও খন্দকার মাশুকুর রহমান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, দেশনেত্রীর আগমনে এই অঞ্চলে একটা জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা দেখেছি,কীভাবে খালেদা জিয়াকে সুশৃংখলভাবে মহাসড়কের দু’ধারে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। এই জনস্রোত না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না সরকারে ওপর মানুষ কতটা ক্ষুব্ধ।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ম্যাডামের আগমনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানুষের এই ঢল গণতন্ত্রের পক্ষে রায়। দেশের মানুষ বলতে চাইছেন, বাংলাদেশ ও দেশের গণতন্ত্র খালেদা জিয়ার হাতে নিরপাদ। তাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকেই আগামী দিনে গণতন্ত্রের পতাকা তুলে ধরতে হবে। দেশের জনগণ এই সরকারের সব অন্যায়-অত্যাচার থেকে মুক্তি চায়।