চিড়িয়াখানায় মৃত্যুর পথে ১৮ বছর বয়সী যুবরাজ

0
চিড়িয়াখানায় মৃত্যুর পথে ১৮ বছর বয়সী যুবরাজ

কুমিল্লা চিড়িয়াখানার সিংহ যুবরাজকে দেখ তে গিয়ে দর্শনার্থীদের মন ভালো হওয়ার বদলে আরও খারাপ হয়ে যায়, ‘যুবরাজ’ ভালো নেই। অকেদিন ধরেই শয্যাশায়ী। খাবারও তেমন মুখে তুলছে না। কেউ কেউ তার মুমূর্ষু অবস্থার ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। যুবরাজের এ ছবি দেখে চিড়িয়াখানার ঠিকাদার ও জেলা পরিষদকে অনেকে তুলাধোনা করছেন।

চিড়িয়াখানায় মৃত্যুর পথে ১৮ বছর বয়সী যুবরাজ

ইতি মধ্যেই যুবরাজকে নিয়ে ফেইসবুকে তুলপার উঠেছে।

সালমান নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী যুবরাজের ছবি দিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, যারা যুবরাজের খবার খেয়ে ফেলেছে তাদের বিচার চাই। তাদেরও এভাবে খাঁচায় বন্দি করে রাখা হোক।

কামাল হোসেন নামে আরেকজন লিখেছেন, ঠিকাদার জেলা পরিষদকে খাওয়ালে বিল পাবে, সিংহকে খাওয়ালে বিল পাবে না।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা চিড়িয়াখানা নামেই শুধু চিড়িয়াখানা। নেই উল্লেখযোগ্য কোনও পশু-পাখি। যে কয়েকটি পশু-পাখি আছে সেগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। অধিকাংশ খাঁচা শূণ্য পড়ে আছে। কয়েকটি খাঁচা ভাঙা। একটু বৃষ্টি হলে চিড়িয়াখানা ডুবে যায়, ডুবে যায় এর প্রবেশ পথ। পাঁচ বছর ধরে এ দুরাবস্থা মধ্য দিয়ে চলছে কুমিল্লা চিড়িয়াখানা।

সূত্র মতে,১৯৮৬ সালে কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুরি মৌজায় জেলা প্রশাসকের বাংলোর পাশে ১০.১৫ একর জমিতে গড়ে উঠে কুমিল্লা চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন। এই জমির মালিক জেলা প্রশাসন। আর ব্যবস্থাপনায় রয়েছে জেলা পরিষদ। এই দো-টানায় চিড়িয়াখানার কোনও উন্নয়ন হচ্ছে না। এ কারণে তেমন দর্শনার্থীও নেই। চিড়িয়াখানাটি অনেকটা পরিত্যক্ত বাড়ির মতো।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, খাঁচাগুলো শূণ্য পড়ে আছে। সব মিলিয়ে ৮টি বানর, ৩টি বনমোরগ, ৩টি হরিণ রয়েছে। একমাত্র সিংহ যুবরাজের মুমূর্ষু অবস্থা। যে কোনও সময় এটি মারা যেতে পারে।

সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সাবেক সভাপতি আলী আকবর মাসুম বলেন, কুমিল্লার মতো বড় শহরের চিড়িয়াখানার এই বেহাল অবস্থা দুঃখজনক। চিড়িয়াখানার সংস্কার ও পশু-পাখি দিয়ে নতুন করে সাজানো এখন সময়ে দাবি।

লিজ নেওয়া অংশীদারদের একজন রায়হান হাসানাত বলেন, ‘লিজ ও পশু-পাখির খাবার মিলিয়ে বছরে ১৯ লাখ টাকা খরচ হয়। কিন্তু পশু-পাখি না থাকায় দর্শনার্থী তেমন আসছে না। এতে আমাদের লোকসান গুনতে হবে।’

কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, ‘যুবরাজ সিংহটি মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে। চিকিৎসক এনে তার চিকিৎসা করিয়েছি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একটি সিংহ সাধারণত ১৪ বছর বাঁচে। যুবরাজের বর্তমান বয়স ১৮ বছর। এটি মূলত তার বাড়তি জীবনকাল অতিবাহিত করছে। তিনি আরও বলেন, চিড়িয়াখানার মাটি ভরাট করেছি, দেওয়াল নির্মাণ চলছে। কিছু দিনের মধ্যে কিছু পশু-পাখি আনা হবে। আশা করছি চিড়িয়াখানার উন্নয়নে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নিতে পারবো।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে