“আমি যখন জয়যাত্রা বানিয়েছিলাম, তখন আমার ধারণা ছিল মানুষ সিনেমাটা দেখবে। আমাদের দেশের গল্প নিয়ে সিনেমাটা। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। সেই সময়ে নিজের ৭৫ লাখ টাকা খরচ করে আমি সিনেমাটা বানিয়েছিলাম। ২০০৪ সালের ৭৫ কিন্তু বর্তমান বাজারমূল্যে অনেক।
আমার ধারণা মিথ্যে হল। দর্শক সিনেমাটি দেখেনি। পরবর্তীতে যখন রূপকথার গল্প বানাই তখন একটি হল ছাড়া সেটা কোন হল মালিকই নিতে চায়নি। সিনেপ্লেক্সে দুই মাস চলেছিল সিনেমাটা।
আবার দারুচিনি দ্বীপ যখন এন্টারটেইনিং করে বানালাম, সেটা আবার মানুষ খুব দেখল। অজ্ঞাতনামার ক্ষেত্রে আবার রূপকথার গল্প কিংবা জয়যাত্রার বাস্তবতা ফিরে আসলো। হলওয়ালারা এটা নিলেন না। তারা বিশ্বাস করেন না যে এটা দর্শক দেখবে! তারা বিশ্বাস করলে না এই সিনেমাতে বিনোদন আছে! অথচ অজ্ঞাতনামা কিন্তু এক অর্থে ব্ল্যাক কমেডি!
এই জায়গাটায় নির্মাতা অসহায়। কারণ তাকে বিপণনযোগ্য হতে হবে। কিন্তু সেই দায় নিয়ে আমি সিনেমা বানাইনি।
এটা অবশ্য সারা বিশ্বের বাস্তবতা। চটুল জিনিস বা পপ আর্ট বেশি মানুষ দেখে, সেটা বেশি বিক্রি হয়। ভালো সিনেমা ইউরোপ-আমেরিকাতেও কমার্শিয়াল সিনেমার সাথে পেরে উঠে না। বক্স অফিসের হিসেবে এটাই রিয়েলিটি। যদিও ওদের ঐখানে অন্যান্য ব্যবস্থার মাধ্যমে সিনেমা দেখানো হয়। সেখানে মাস টেস্টের কাছে সিনেমাকে যেতে হয়।”
হালদা সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে সামনের শুক্রবার। অর্থাৎ ১ ডিসেম্বর। একসময় যে পরিচালকের সিনেমা মাত্র একটি হলে চলেছিল, সেই মানুষটার সিনেমা আজকে ৮০ টা হল কনফার্ম করল। জি হ্যাঁ, হালদা সিনেমাটি বাংলাদেশের ৮০ টি হলে মুক্তি পাবে আগামি শুক্রবার। এফডিসির বাইরে একটি সিনেমার এতগুলো হল পাওয়া নিঃসন্দেহে অসাধারণ ব্যাপার। ক্রেডিট গোজ টু অভি কথাচিত্র পরিবেশক যারা এই সিনেমার ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।
এবার বাদবাকি দায়িত্ব শুধু আপনার। আপনি হলে গিয়ে সিনেমা না দেখলে আরেকটি অজ্ঞাতনামার মতো পরিস্থিতি হওয়ার আশঙ্কা হবে যেটা আমার মনে হয় আমরা কেউই চাই না। তৌকির আহমেদের মতো একজন প্যাশনেট ফিল্মমেকারের সিনেমা আমরা যদি হলে গিয়ে না দেখি, তাহলে আমরা ভালো সিনেমা ডিজার্ভ করি না।
শুধু দেশেই না, বিদেশেও রিলিজ পাবে হালদা। ৮ ডিসেম্বর বিশ্বের ১৬ টি দেশে রিলিজ পেতে যাচ্ছে হালদা।
Syed Nazmus Sakib