আগামীকাল প্রকাশিত হচ্ছে আদনান আহমেদ রিজনের নতুন অনূদিত বই “ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান”

0
ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান

এর আগে আমি কখনো অ্যাম্বুলেন্সে চড়িনি।

বাহনটার ভেতরের অংশটা কেমন যেন অদ্ভুত। দুটো বিছানা ঘিরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ছুরি-কাঁচি, ক্যাথেটার, মোটা-চিকন নল, ওষুধের বাক্স ইত্যাদি। এসব যন্ত্রপাতি দেখে মনে হয়, যেন হঠাৎ করেই কোন হাসপাতালকে চলাফেরা করতে আদেশ দিয়েছে কেউ।
অলককে গাদাগাদি করে ঢোকানোর পর, আমার আর রায়ানের জন্য দাঁড়ানোর মতো জায়গাও বাকি নেই। বিছানার সাদা চাদরের প্রতি ইঞ্চি অলকের রক্তে রঞ্জিত, দেখলে আসল রঙ লাল বলে ভ্রম হবে যে কারও। আমাদের বন্ধু বলে একেবারে চেনাই যাচ্ছে না ওকে। চোখ উল্টে গেছে, ফোঁকলা বুড়োর মতো মুখের বাঁধ পেরিয়ে অনেকখানি বাইরে বেরিয়ে আছে জিহ্বা। ডাক্তারের কাছে পরে জানতে পেরেছিলাম, সামনের চারটা দাঁত ভেঙে যাওয়াতেই এই বেহাল দশা।
ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান
গায়ের পেশীগুলো অনড়, ঠিক ওর বাবার শরীরের ডানদিকের মতো। অস্বাভাবিকভাবে বেঁকে আছে ডান হাঁটু, দেখলে মনে হবেঃ যেন পা-টাতে কোনকালে কোন হাড্ডি ছিলই না। নিজের বুদ্ধিতে যেটুকু বুঝতে পারছি… বাজি ধরে বলতে পারি, ছেলেটা মারা গেছে।
‘অলক যদি বেঁচে ফিরতে পারে, তাহলে আমাদের পাগলামিগুলোকে নিয়ে একটা বই লিখব… অবশ্যই লিখব,’ আমি প্রতিজ্ঞা করলাম। টানা পঞ্চাশ ঘণ্টা নির্ঘুম কাটানোর পর যখন মাথার ভেতর সব তালগোল পাকিয়ে আছে, এই অবস্থায় এমন একটা প্রতিজ্ঞা একটু অদ্ভূতই বটে, কিন্তু…

ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান- চেতন ভগত।
আদী প্রকাশনের ব্যানারে প্রকাশিত হচ্ছে আগামীকাল। আজ রাত পর্যন্ত সর্বোচ্চ ছাড়ে প্রি-অর্ডার চলছে বুকস্ট্রিট, বিবিধ, আরণ্যক, স্টপ অ্যান্ড শপে। হ্যাপি রিডিং। 🙂

কাহিনী সংক্ষেপঃ গল্পটা তিন বন্ধুর- অলক, হরি আর রায়ানের।
অনেক চেষ্টা-চরিত্রের পর ওরা ভর্তি হলো ভারতের সবচেয়ে বড় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ-আইআইটিতে। কিন্তু কলেজ জীবনের শুরু থেকেই তিন বন্ধুকে তাড়া শুরু করল একের পর এক বিভীষিকা।

এক সময় ওরা টের পেল, আসল গলদ হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থায়। শুরু হলো ঘাড়ত্যাড়া শিক্ষাব্যবস্থাকে বাগে আনার একের পর এক তোড়জোড়। কিন্তু যুগ যুগ ধরে একই নিয়মে চলে আসা শিক্ষাব্যবস্থা কি ছেড়ে কথা বলবে?

দেখা গেল, একেবারে নিচের সারির ছাত্র উপাধি পেয়ে গেছে তিন বন্ধু। ভবিষ্যৎ, প্রেম, বন্ধুত্ব… এসবের নির্ণায়ক জিপিএ হয়ে দাঁড়িয়েছে এমন একটা সংখ্যা, যার রেশ টেনে বেড়াতে হবে সারাটা জীবন।
আইআইটির অন্যান্য শিক্ষার্থীরা যখন পৃথিবী শাসন করবে, এই নিচু শ্রেণির ছাত্ররা তখন ধুঁকবে বেঁচে থাকার জন্য।

কি হবে ওদের? তিন বন্ধু কি মুক্তি পাবে এই আজগুবি শিক্ষাব্যবস্থার খপ্পর থেকে? পারবে সফল হতে? প্রমাণ করতে পারবে, ওরা ফাইভ-পয়েন্ট-সামবডি নয়, ফাইভ-পয়েন্ট-সামওয়ান?

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে