পর্ব- ০১
আমি আজ যাদের নিয়ে লিখছি, তাদের নিষ্ঠুরতা সব কিছুকে ছাড়িয়ে যায়।এরা একেকজন হলেন ইতিহাসের কুখ্যাত নৃশংস খুনিরা অথবা সিরিয়াল কিলার্স।দূর্বল চিত্তের কেউ এই লিখাটি না পড়ার অনুরোধ রইলো।

১) John Wayne Gacy
John Wayne Gacy, যে “The Killer Clown” হিসাবে পরিচিত, সে তার পরিচিত জগতে ছিল একজন ভাল স্বামী, একজন ভাল পিতা। সে কত লোককে তার সারা জীবনে হত্যা করেছে তার সঠিক হিসাব আজও অজানা। তার এই কালজীবনের অধ্যায় প্রকাশ পায় যখন দুইটা টিনএজ ছেলেকে সেক্সুয়ালি এসাল্ট করার জন্য তার ১০ বছরের সাজা হয়। সময়টা ছিল ১৯৬৮ সাল। কিন্তু জেলে তার স্বাভাবিক ভাল ব্যবহার দেখে তার সাজা কমে যায়, মাএ ১৮ মাস সাজা কাটিয়ে সে ছাড়া পেয়ে যায়।
জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সে বিয়ে করে।(কিছুদিন পর তাদের ডিভর্স হয়ে যায়, তার বৌ জেনে যায় যে তার স্বামী গোপনে একজন সমকামী) এবং খুব দ্রুত সে সমাজে খুব জনপ্রিয় একজন ব্যক্তি হয়ে যায়। সে “Pogo the Clown” এর পোষাক পরে বাচ্চাদের পার্টি ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে ভলানটিয়ার ওয়ার্ক করতো। সে ছিল একজন সম্মানিত ব্যবসায়ী ও প্রতিবেশীদের কাছে প্রিয়।
পরের ছয় বছর, সে ফাইনালি গ্রেফতার হবার আগে সে নিম্নে ৩৩ জন পুরুষকে ক্যাডনাপ করে হত্যা করে। ডেডবডি গুলো সে তার বাড়ির সামনের বাগানে কবর দিত, যখন বাগানে আর জায়গা সংকুলান না হলো তখন সে ডেডবডি গুলোকে নিকটবর্তী নদীতে ফেলে দিত। সে তার শিকার হিসাবে ভাসমান টোকাই, পুরুষ প্রস্টেটিউট ও বাচ্চা ছেলেদের বাছাই করতো। সে তার শিকারদের অজ্ঞান করে তার গাড়িতে তুলতো, তাদের বাসায় এনে টরচার করতো, রেপ করতো সবশেষে হত্যা করতো। তার হবি ছিল এই সব হতভাগাদের হাড়গোড় সংগ্রহ করার। গ্রেফতার হবার পর তার বেসমেন্টে সাজিয়ে রাখা অসংখ্য হাড়গোড় পাওয়া যায়। যদি এই সব হাড়গোড় তার শিকার করা হতভাগাদের হয়ে থেকে তাহলে হিসাব মতে সে ছয় বছরে ৩৯৫ জনকে হত্যা করেছে। ১৯৯৪ সালে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়।
[আমাদের দেশের রাজাকাররা এর চেয়ে অনেক বেশী ভয়ংকর]

২) Jeffrey Dahmer
Jeffrey Dahmer হলো আমেরিকার সবচেয়ে ভয়াবহ সিরিয়াল কিলার। ১৩ বছরের সে ১৭ জন পুরুষ ও বালককে হত্যা করে। তার হত্যা বলতে বুঝতে হবে, ধর্ষন, শরীর ব্যাবচ্ছেদ, নেকরোফিলিয়া(মৃতদেহের সাথে সহবাস), ক্যানিবালিজম(নরমাংসভক্ষন)। তার অনেক ভিক্টিম পালাতে সক্ষম হলেও সে গ্রেফতার হয় যখন সে তার একজন ভিকটিমকে মৃত মনে করে ফেলে রাখে, কিন্তু ভিক্টিমটি জীবিত ছিল এবং জ্ঞ্যান আসার পর সে দৌড়ে রাস্তায় উঠে আসে এবং একটি পুলিশ গাড়ি থামাতে সমর্থ হয়। যখন পুলিশ এই সিরিয়াল কিলারের এপার্টমেন্টে প্রবেশ করে তারা ডিসটার্বিং পরিস্থিতি দেখে। তারা দেখতে পায় এই উম্মাদ লোকটি একজন ভিকটিমের মাথায় ড্রিলম্যাশিন দিয়ে ফুটা করতাছে, তার ভাষ্য মতে সে একজন “মাইন্ডলেস সেক্স স্লেভ” তৈরি করার চেষ্ঠা করতাছে। যখন তার ভিক্টিমরা মারা যেত তখন সে তাদের দেহের উপর “grotesque acts”(এইটার ব্যপারে আমার কোন আইডিয়া নাই) পালন করতো, সেই সাথে চলতো সেক্সুয়াল এসাল্ট, এবং মৃতদেহ খাওয়া।
১৯৯৪ সালে তাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয় এবং তার জেলের সহকর্মী তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।

৩) Ted Bundy
এই সিরিয়াল কিলার ছিল খুবই সুদর্শন, বন্ধুবত্সল ও চার্মিং। সে চমৎকার বাকপটুও ছিল ফলে খুব সহজে সে তার শিকার মানে মেয়েদের পটিয়ে ফেলতে পারতো। তার এই সুদর্শন চেহারার পিছনের চেহারাটা বের হয়ে যেত। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে ৩০ জন মেয়েকে হত্যা করে। সে অশিকার করলেও তার বিরুদ্ধে আরও ৪০ জন মেয়ের হত্যা ও গুমের অভিযোগ আছে।
সে তার হিক্টিমদের বাড়িতে ঢুকে তাদের ঘুমের মাঝে তাদের হত্যা করতো। সে তার ভিক্টিমদের হত্যা করার পর রেপ করতো, টর্চার করতো তারপর তাদের শরীরের অংশ কেটে রাখতো সুভেনিয়ার হিসাবে। তার বাসা থেকে এমন অনেক শরীরের অংশ পাওয়া গেছে।
একটা শ্বাসরুদ্ধকর পুলিশি ধাওয়ার পর এই সিরিয়াল কিলার কে পুলিশ ধরতে সমর্থ হয়। ১৯৭৯ সালে তার মৃত্যুদন্ডাদেশ হয় এবং ১৯৮৯ সালে তাকে ইলেকট্রিক চেয়ারে বসিয়ে তা কার্যকর হয়।

৪) Gary Ridgway
Gary Ridgway, “Green River Killer” হিসাবে পরিচিত, ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালের ভিতর সে ৭১ জন নারী হত্যা করে। তার প্রথম ৫ জন ভিক্টিমকে গ্রিন রিভার থেকে উদ্ধার করা হয়, যার কারনে সে তার ঐ নিক পেয়েছে।
তাকে ধরা এতো সহজ ছিল না, কারন তার আইকিউ ছিল এভারেজের চেয়ে অনেক বেশী, স্কোর হিসাবে ৮২।
তার ভিক্টিমদের বেশিরভাগই ছিল প্রস্টেটিউট। সে তার ভিক্টিমদের রাস্তা থেকে তুলতো এবং তাদেরকে তার ছেলের ছবি দেখিয়ে বিশ্বাস অর্জন করতো। তারপর তাদেরকে নিজ হাতে হত্যা করতো। সে প্রায়ই সহবাসের জন্য ডেডবডির কাছে ফিরে আসতো। সে গ্রেফতার হয় যখন তার শ্রুক্রানু একজন ভিক্টিমের শরীরে পাওয়া যায়।
২০০১ সালে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এখন পর্যন্ত সে জেল কাটছে।

৫) Ed Gein
তার বিরুদ্ধে মাএ দুইটি হত্যার অভিযোগ থাকলেও তার কৃত নিষ্ঠুর পন্থায় হত্যার পদ্ধতি থেকে “সাইকো”, “টেক্সাস চেইনসো ম্যাসাকার” ও “সাইলেন্স অফ দি অম্ব” মুভি তৈরির প্লট হয়েছে। আর কিছু বলার দরকার আছে কি?
সে তার ভাই ও মার সাথে ওয়াসিংটনে বাস করতো। তার বিরুদ্ধে তার ভাইকে হত্যার অভিযোগ ছিল কিন্তু পুলিশ তা প্রমান করতে পারে নাই। তার মা মারা যাওয়ার পর তার মানসিক অবস্থা ভেঙ্গে পরে, সে প্রায়ই মার কবরস্থানে যেত। এবং সদ্য মৃত মাঝবয়সী মহিলাদের বডি কবর খুরে বের করতো। তার বাসা থেকে মানুষের শরীরের চামড়া, খুলি দিয়ে তৈরি পানপাত্র, নাক, চুল, স্তনের বোটা দিয়ে তৈরি কোমরের বেল্ট পাওয়া যায়। তার ফ্রিজে ফ্রেশ মানুষের অর্গান পাওয়া যায়।
১৯৫৭ সালে সে গ্রেফতার হয়। ১৯৮৪ সালে হার্ট এটাকে তার মৃত্যু হয়।












