নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না আক্রমণকারীদের সামনে শান্তির পতাকা না তুলে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সোমবার বিকেলে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিপীড়িত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি।
আলোচনায় মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বাস করে ভুল করেছেন, তখন উঠে না গেলে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হতো। তারা সহজে মাথা নোয়াবে না, মাথা নোয়ালে তো ক্ষমতা ছাড়তে হবে। তারা ক্ষমতা ছাড়বে না। তাই নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ করতে হলে তাদের ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আক্রমণকারীদের সামনে শান্তির পতাকা তুলে লাভ হবে না, রুখে দাঁড়ান। এভাবে মার হজম করা যাবে না। কথায় ভুলবেন না, তাদের মিথ্যাচারে কান না দিয়ে নিজেদের দাবি আদায়ে সচেষ্ট থাকুন। স্বেচ্ছাচার, মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’ এ ছাড়া বিএনপি না গেলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না বলেও মনে করেন তিনি।
চলমান কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতা ছাড়াও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানে। আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে তাঁরা বলেন, নির্যাতন-নিপীড়ন করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। ছাত্রদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সবাইকে মাঠে নামতে হবে। গ্রেপ্তার ছাত্রদের মুক্তির পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন তাঁরা।
এই দিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার মূল কথাই ছিল বৈষম্য নিরসন। মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত সেই কাজটাই বর্তমান প্রজন্মের ছাত্ররা করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তারা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। কোটাব্যবস্থাকে মেধাশূন্য করার চক্রান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
আন্দোলনকারীদের হাড় ভেঙেই থামছে না উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, তাদের আটক করে রাখা হচ্ছে; যাতে করে আবার মাঠে নামতে না পারে। হামলাকারীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না, আক্রান্ত ব্যক্তিরা গ্রেপ্তার হচ্ছে। আহত ব্যক্তিদের হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়াকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মোজাম্মেল মিয়াজী বলেন, ‘উপাচার্যের বাসায় হামলাকারী অভিযোগ দিয়ে, জামায়াত-শিবিরের অভিযোগ দিয়ে আমাদের নিপীড়ন করা হচ্ছে। আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক জালাল আহমেদ বলেন, রক্তের শেষ বিন্দু থাকা পর্যন্ত পাঁচ দফা দাবি আদায়ে তাঁদের আন্দোলন চলবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকর্মী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব জায়গায় ভয় তৈরি করা হয়েছে, এ ভয় ভেঙে বেরিয়ে আসতে হবে।’