বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘প্রতিরোধের ঘোষণা’ দিয়েছে দলটি। একইসঙ্গে মুক্ত খালেদা জিয়াকে নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দলটির নেতারা। তারা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেয়া হবে না। প্রতিহত করা হবে।
নয়াপল্টনে শুক্রবার বিকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার দাবিতে এক বিরাট সমাবেশে বিএনপি নেতারা এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনের এক নম্বর শর্ত হচ্ছে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে কারাগারে রেখে কোনো নির্বাচন হবে না। দেশের মানুষ তা হতে দেবে না। নির্বাচনের আগে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নির্বাচনে কিছুদিনের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে।
বিএনপির ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুপুর ১ টা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হতে থাকে। এ সময় নেতাকর্মীরা মিছিল থেকে মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইসহ বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলেন। অপরদিকে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র বিএনপি অফিস, পল্টন মোড়, ফকিরাপুল মোড়সহ এর আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়।
এরপর দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে সমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় এবং সোয়া পাঁচটার দিকে শেষ হয়। বিএনপির সমাবেশকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের দু’টি সড়কে গাড়ি চলাচলও বন্ধ ছিল। এতে আশেপাশের এলাকায় দীর্ঘ যানজট তৈরি হয় এবং এ এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসেন। কিছু শর্ত সাপেক্ষে সমাবেশের অনুমতি পেলেও সময় স্বল্পতার কারণে মঞ্চ তৈরির সুযোগ পায়নি বিএনপি। ফলে খোলা ট্রাকের ওপর মঞ্চ তৈরি করে নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন। ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল পর্যন্ত সমাবেশের বিস্তৃতি ঘটে।
দলের মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নুল আবেদীন ফারুক, রুহুল কবির রিজভী,সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নিতাই রায় চৌধুরী, কাজী আবুল বাশার, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, আব্দুল সালাম আজাদ,শফিউল বারী বাবু,আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল,রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান মিন্টু,হেলাল খান প্রমুখসহ দলটির অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।