ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় আছিয়া আক্তার নামে এক নারী করোনার টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করাতে গিয়ে জানতে পারলেন তিনি মৃত। এ ঘটনায় তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা হতবাক হয়ে পড়েন। জীবিত থাকার পরও কীভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে নাম কেটে মৃত দেখানো হয়েছে তা প্রথম দিকে তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারেননি।
পরে তিনি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে জানতে পারেন, ২০১৭ সালে মৃত দেখিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে তার নাম কর্তন করা হয়েছে। এর পর আছিয়া আক্তারের স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান নির্বাচন অফিসে পুনরায় ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেন।
জানা যায়, ত্রিশাল পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী আছিয়া আক্তার ২০০৮ সালে ভোটার হন। এর পর জাতীয় নির্বাচনসহ পৌর নির্বাচনে ভোট প্রয়োগ করেন। একাধারে ৯ বছর জাতীয় পরিচয়পত্রে জীবিত ছিলেন। ২০২১ সালে পৌরসভা নির্বাচনে আছিয়া ভোট দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে গেলে জানানো হয় ভোটার তালিকায় তার নাম নেই। তখন আছিয়ার ধারণা ছিল কোনো কারণবশত তার নাম আসেনি। তাই সে ভোট দিতে পারেনি।
এদিকে করোনা ভ্যাকসিন প্রথম ডোজ টিকা দিতে গেলে ত্রিশাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক আছিয়াকে জানান, সার্ভার এ তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতাল থেকে ফিরে এসে আছিয়া আক্তার ত্রিশাল পৌরসভা গণটিকা কর্মসূচিতে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দেখিয়ে টিকা নেন।
আছিয়া আক্তার জানান, আমি দুই সন্তানের জননী। বেশ কয়েকটি নির্বাচনে ভোট দিয়েছি। আমার পরিবারের কেউ মারা যায়নি। আমি এখনও বেঁচে আছি। আমার নাম জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে কেন কর্তন করা হয়েছে জানি না। তিনি এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আছিয়া আক্তারের স্বামীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে নাম কর্তন করায় অনেক ঝামেলার সৃষ্টি হয়। অনেক জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে। আবার ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য নির্বাচন অফিসে দরখাস্ত জমা দিয়েছি।”
রবিবার ত্রিশাল নির্বাচন কর্মকর্তা ফারুক মিয়া জানান, “আছিয়া আক্তারকে ২০১৭ সাল থেকে মৃত দেখানো হচ্ছে। মনে হয় তথ্য সংগ্রহকারীরা কোথাও ভুল করেছেন। তার ভোটার কার্ডটি সংশোধনের জন্য একটি আবেদন করেছেন। বিষয়টির সমাধান করা হবে।”