পরীক্ষার বর্তমান পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া রোধ ‘কোনোভাবেই সম্ভব নয়’ বলে মনে করেন শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন। আগামীতে এসএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র না ছাপিয়ে বই খুলে পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে বলেও জানান তিনি।
সোমবার রাজধানীতে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে (নায়েম) আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন এসব তথ্য জানান।
এসএসসি কিংবা এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের সামনে ছাপানো কোনো প্রশ্ন নেই! বরং পরীক্ষার হলে তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া প্রশ্নে শিক্ষার্থীরা বই খুলেই উত্তর লিখতে পারছে! এমন অপরিচিত পরীক্ষা পদ্ধতি অনেকের কাছে অদ্ভুত শোনালেও আগামীতে এভাবে পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না, সেটাই এখন চিন্তা করতে হচ্ছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ভয়াবহ প্রেক্ষাপটে।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘ভিন্ন পদ্ধতিতে যাতে প্রশ্ন ছাপানোর প্রয়োজন না হয় সেই রকম কোনো কিছু করা যায় কি না সেজন্য তিন-চারটা কমিটি কাজ করছে এবং মন্ত্রণালয় থেকেও ভিন্নভাবে চিন্তা করা হচ্ছে এমন কিছু করা যায় কি না যে প্রশ্ন ছাপানোর প্রয়োজনীয়তা নেই। প্রশ্ন ওপেন থাকতে পারে, ওপেন বুক এক্সাম হতে পারে বা আরো অনেক কিছু আমরা চিন্তাভাবনা করছি।’
সোহরাব হোসাইন আরো বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় প্রশ্নপত্র আউট বন্ধ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি এবং মনে করি।’
শিক্ষাসচিব আরো বলেন, ‘২০ লাখ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দেয়। একটি প্রশ্ন ছাপাতে চার-পাঁচদিন সময় নেয়। একজন মানুষ যদি অসৎ হয়, সে যদি মনে করে আমি প্রতিদিন একটা বা দুইটা করে মুখস্থ করে যাব, বাইরে গিয়ে লিখেই রাখব। তার পর একসাথে করব, একটি প্রশ্ন হবে। এটি কীভাবে ঠেকাব? আমি ২০১৪ সালেই বলেছি এ পদ্ধতিতে প্রশ্ন আউট রোধ করা সম্ভব নয়।’
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান।
গত ১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। সেদিনই প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এরপর থেকে প্রতিটা পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস হয়। এ অভিযোগে রাজধানীসহ সারা দেশে পরীক্ষার্থী, শিক্ষকসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর আগেও বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর পাওয়া যায়।