প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাইবার টহল

0
প্রশ্ন ফাঁস

আজ সোমবার থেকে শুরু হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে নানা কার্যক্রম শুরু করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা। গত ১৫ দিন ধরেই পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ ফেসবুক, ভাইবার, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপসহ নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাইবার টহল চালিয়ে আসছে। প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রকে ধরতে পুলিশ, সিআইডি ও র‌্যাব কর্মকর্তারা নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। নজরদারির মধ্যে নেওয়া হয়েছে দেশের মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও। ছাপাখানা থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত সবখানেই রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারি। শুধু এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিশেষ পাঁচটি টিম গঠন করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রশ্ন ফাঁস
আজ সোমবার শুরু হয়ে এই পরীক্ষা শেষ হবে ১৪ মে। ১০ বোর্ডের অধীনে এবার মোট পরীক্ষার্থী ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ জন। এরই মধ্যে এ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে বৃহস্পতিবার থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকেও নানা কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) এবং পাবলিক পরীক্ষা সংক্রান্ত জাতীয় মনিটরিং কমিটির অন্যতম সদস্য শেখ নাজমুল আলম বলেন, এইচএসসি ও সমমানের প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে এবার আগেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকও হয়েছে। এসব বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবারের পরীক্ষায় সব সেটের প্রশ্ন এক ব্যাগেজে কেন্দ্রে যাবে। ব্যাগেজটি বিশেষ নিরাপত্তা কাগজে মোড়ানো থাকবে। যেটি একবার খুললে আর লাগানো সম্ভব নয়।

পরীক্ষা সংক্রান্ত মনিটরিং কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, কোন সেটে পরীক্ষা হবে তা সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে কেন্দ্রে লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। এতে ফাঁসকারীরা বুঝতেই পারবে না কোন সেটে পরীক্ষা হচ্ছে। এসব সিদ্ধান্ত ছাড়াও প্রশ্নপত্র ফাঁসের সম্ভাব্য সব ধরনের কারণ চিহ্নিত করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পুলিশের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেন, আগের অভিজ্ঞতায় তারা দেখেছেন- সাধারণত প্রশ্নপত্র ফাঁসের টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। নির্দিষ্ট কিছু মোবাইল নম্বরে এসব টাকা পাঠানো হয়। এ জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে আগেভাগেই মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। তারা পুলিশকে সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। সন্দেহজনকভাবে অবৈধ লেনদেন করলেও সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থী বা তার স্বজন ও টাকা গ্রহণকারীকে সহজেই চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নেওয়া যাবে।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সাইবার ক্রাইম বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় সাইবার টহল চলবে। এসএসসি পরীক্ষার সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসকারী চক্র গ্রুপ তৈরি করে অপতৎপরতা চালালেও এবার এসব চক্র অনেকটাই নিষ্ফ্ক্রিয়। অবশ্য গত কয়েক দিনে সন্দেহজনক পাঁচটি গ্রুপকে চিহ্নিত করে তাদের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে।