সারা দেশে মিয়ানমারের সব ধরনের পণ্য বর্জন ও প্রত্যাখ্যান করার জন্য সরকার ও জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশান-২ চত্বরে ল্যান্ডমার্ক ভবনের সামনে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি থেকে এ আহ্বান জানান। মিয়ানমারে আরাকান রাজ্যে চলমান সহিংসতা ও গণহত্যা বন্ধের প্রতিবাদে এ আহ্বান জানানো হয়।
ঘেরাও কর্মসূচিতে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, ‘দেশে যেখানে মিয়ানমারের পণ্য বিক্রি হচ্ছে, সেই পণ্য জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে, বর্জন করবে। দেশের কোথাও কোনো বার্মিজ পণ্য বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। ব্যবসায়ীসহ সবার প্রতি আহ্বান। যে বার্মিজ পণ্য কিনছেন, আপনাদের টাকা দিয়েই অস্ত্র কিনে বার্মা নিরীহ সাধারণ রোহিঙ্গাদের রক্ত ঝরাচ্ছে। বার্মাকে বাণিজ্যিকভাবে কোণঠাসা করে অস্ত্র কেনা বন্ধ করতে হবে।
সরকারকে মিয়ানমারের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার যেভাবে মানবিক প্রশ্নে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, একইভাবে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত বাতিল করুন। যে চালের ভেতরে মানুষের রক্ত লেগে আছে, দেশের জনগণ সেই চাল খেতে চায় না। আমি মনে করি, দেশের জনগণ সেই চাল দেশে ঢুকতে দেবে না।
ইমরান এইচ সরকার আরও বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তে কীভাবে নারী-শিশুসহ রোহিঙ্গারা বয়োজ্যেষ্ঠদের লাশ পানির মতো ভেসে আসছে, তা আপনারা দেখেছেন। কীভাবে সাধারণ রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তা দেখেছেন। মানবিক কারণে বাংলাদেশ যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তা অনন্য নজির। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশের অমানবিক আচরণ মাত্রা কিন্তু ছাড়িয়ে গেছে।
এর আগে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গুলশান-২ মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা। বিক্ষোভকারীরা সাপোর্ট রোহিঙ্গাজ, স্টপ জেনোসাইড, সেভ রোহিঙ্গা পিপল, শেম অন ইউ সুচি, নো মোর পারসিকিউসর, সাপোর্ট রোহিঙ্গাজ এসব লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন। তাঁরা ‘ঘেরাও ঘেরাও হবে, মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরা হবে, ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা হত্যা বন্ধ করো, করতে হবে’ স্লোগান দিচ্ছেন।
আজকের ঘেরাও কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। এদিকে পুরো ঘেরাও ও বিক্ষোভ কর্মসূচিটি ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে গুলশান পুলিশ। বিক্ষোভ শেষে পাঁচ সদস্যের একটি দল স্মারকলিপি নিয়ে মিয়ানমার দূতাবাসের দিকে রওনা দেন।