রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের নতুন নিষেধাজ্ঞা আইনের আওতায় ক্রেমলিন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে কার্যত গোটা রুশ জনগণকেই টার্গেট করা হয়েছে। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জয়ী করতে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ করে আসছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। এ অভিযোগে রাশিয়াকে শাস্তি দিতে গত বছর অগাস্টে কংগ্রেস নতুন নিষেধাজ্ঞা আইন পাস করে।
ওই আইনের আওতায়ই যুক্তরাষ্ট্র সোমবার ২১০ জন রুশ নাগরিকের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রকাশ করা এ তালিকায় রাশিয়ার ১১৪ জন সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং ৯৬ জন শীর্ষ ধনীর নাম আছে। একে বলা হচ্ছে ‘পুতিন লিস্ট’। তবে তালিকায় যাদের নাম আছে তাদেরকে নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় রাখা হয়নি বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, এটি নিষেধাজ্ঞা আরোপের তালিকা নয় এবং নতুন নিষেধাজ্ঞা আইনের সঙ্গে তালিকায় নাম আসার কোনো সম্পর্ক নেই। তাছাড়া, এখনই রাশিয়ার ওপর বাড়তি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে না বলেও জানিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
কিন্তু পুতিন রুশদের ওই তালিকা প্রকাশের পদক্ষেপকে ‘অবন্ধুসুলভ’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কে জটিলতা বাড়বে। তবে এ পদক্ষেপের পাল্টা জবাব দিয়ে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে নিয়ে যেতে চান না বলেও জানিয়েছেন পুতিন। তিনি বলেন, “এর চেয়ে রাশিয়ার বরং নিজেদের নিয়ে এবং অর্থনীতি নিয়ে ভাবাই উচিত।”
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ এবং ইউক্রেনে আগ্রাসনের অভিযোগে রাশিয়াকে শাস্তি দিতে গতবছর আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে কাউন্টারিং আমেরিকা’স অ্যাডভারসারিস থ্রু স্যাংশন্স অ্যাক্ট (কাটসা) পাসের পর সরকারের কাজ ছিল একটি তালিকা তৈরি করা।আইনানুযায়ী,সোমবারই তালিকাটি প্রকাশের শেষ সময়সীমা নির্ধারিত ছিল।
কংগ্রেস রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠজন হয়ে সুবিধা লাভকারীদের নাম-ধাম দিয়ে এবং তাদেরকে সতর্ক করতেই তালিকাটি করতে চেয়েছে। বলতে চেয়েছে, তারা নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য হতে পারে বা ভবিষ্যতে আরও বড় নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাটসা অ্যাক্ট সমর্থন না করলেও তাতে স্বাক্ষর করেছেন। যদিও তিনি আইনটিকে ‘অসাংবিধানিক’ বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশ করা তালিকায় নাম আসা ব্যক্তিদের অনেকেই পুতিনের দীর্ঘদিনের মিত্র। তাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেনঃ ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের গোয়েন্দা প্রধান আলেকজান্ডার বর্তনিকোভ এবং ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের সার্গেই নারিস্কিন।
এছাড়া রাশিয়ার তেল, গ্যাস ও জ্বালানি সম্পদ নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তিদের নামও তালিকায় এসেছে। আছে ব্যাংকিং সেক্টরের শীর্ষ ব্যক্তিদের নাম।বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন কিরিল শামালভের নামও আছে। যাকে অনেকে পুতিনের জামাতা বলে। ইংলিশ ফুটবল ক্লাব আর্সেনালের মালিক আলিশার উসমানোভ এবং চেলসির মালিক রোমান আব্রামোভিচের নামও আছে তালিকায়।