যৌন ব্যবসার জন্য বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নারী ও শিশুদের পাচার

0
রোহিঙ্গা নারী

যৌন ব্যবসার জন্য বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নারী ও শিশুদের পাচার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। আন্তর্জাতিক এই গণমাধ্যমের একটি দল বিদেশি খদ্দের সেজে এমন তথ্য পেয়েছেন বলে দাবি করছে। বিবিসি নিউজের একটি দল এবং ফাউন্ডেশন সেন্টিনেল নামের অলাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি কক্সবাজার গিয়েছিল এমন ব্যবসার সাথে জড়িত নেটওয়ার্কগুলো সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে।
রোহিঙ্গা  নারী
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অনুসন্ধান শুরুর পর স্থানীয় ছোট হোটেল ও সৈকতের রেজর্ট থেকে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই দালালদের টেলিফোন নম্বর যোগাড় করা সম্ভব হয়। এই হোটেল ও রিসোর্টে যৌন কর্মকাণ্ডের জন্য রুম ভাড়া পাওয়া যায়। পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েই বিবিসি নিউজের দলটি এসব নম্বরে ফোন করে দালালদের কাছে জানতে চায় বিদেশিদের জন্য অল্পবয়সী রোহিঙ্গা মেয়ে পাওয়া যাবে কিনা। এর উত্তরে টেলিফোনের ওপার থেকে এক দালাল জানায়, অল্পবয়সী মেয়ে আছে কিন্তু রোহিঙ্গা মেয়ে কেন খোঁজা হচ্ছে? ওরা তো খুব নোংরা।’

বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দলটি দালালকে জানালো যত দ্রুত সম্ভব তারা এসব মেয়েদের সাথে রাত কাটাতে চায়। খুব দ্রুতই বিভিন্ন দালালদের কাছ থেকে রোহিঙ্গা মেয়েদের ছবি আসতে শুরু করলো। যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছর। বলা হলো, ছবির মেয়েদের পছন্দ না হলে এমন আরো বহু আছে। চাইলেই পাওয়া যাবে। এভাবে এত রোহিঙ্গা মেয়ে পাওয়া গেলো যা খুবই ভয়াবহ। যখন খদ্দের থাকে না তখন এসব মেয়েরা অনেক সময় দালালদের বাড়িতে রান্নাবান্না বা ধোয়ামোছার কাজ করে বলেও জানা গেলো।

অভিযানের বর্ণনায় বিবিসি জানায়, অভিযানের অংশ হিসেবে বিবিসির দলটি কক্সবাজারের এক দালালকে ফোন করে। ছবিতে দেখা দুটো মেয়েকে রাত আটটায় শহরের একটি নামী হোটেলে পাঠাতে বলা হয়। ফাউন্ডেশন সেন্টিনেলের এক কর্মী অনুবাদক হিসেবে হোটেলের বাইরে অপেক্ষা করছিলো। হোটেলের কার পার্কে অপেক্ষা করছিলো পুলিশ। রাত আটটার দিকে বেশ কিছু ফোন কলের পর একটি গাড়িতে করে ড্রাইভারের সাথে ছবিতে দেখা মেয়ে দুটিকে পাঠানো হয়। বিদেশি খদ্দের সেজে থাকা ব্যক্তিটি জানতে চায় আজ রাতের পরে আরো মেয়ে পাওয়া যাবে কিনা। গাড়ির চালক সম্মতি সূচক মাথা নাড়ে। টাকা হস্তান্তরের পরই পুলিশ গাড়ির চালককে গ্রেফতার করে। মেয়ে দুটিকে উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। দারিদ্র আর পতিতাবৃত্তির জালে যেন এই মেয়ে দুটি আটকে গেছে। তারা জানায় পতিতাবৃত্তি ছাড়া জীবন চালানো তাদের জন্য খুব কঠিন।