মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করার ঘোষণা দেওয়া হলেও ব্যক্তিগত উদ্যোগেও চলছে এই কার্যক্রম। এর ফলে সৃষ্টি হচ্ছে চরম বিশৃঙ্খলা। আহত হচ্ছেন নারীরা। রেহাই পাচ্ছে না শিশুরাও। ব্যক্তি উদ্যোগে পর্যাপ্ত ত্রাণ না থাকায় চলন্ত গাড়ি থেকে কাপড়, ওষুধ ও খুচরা টাকার বান্ডিল ছুড়েও দেওয়া হচ্ছে। এই ত্রাণ বিতরণে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থান নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাহিদুর রহমান। তিনি বলেন, আজ স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
মাহিদুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনও কিছু বিশৃঙ্খলা আছে। আজ থেকে ১২টি স্পটে পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।’ ১২টি স্পট সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহিদুর রহমান বলেন, ‘ক্যাম্পের আশেপাশে মোট ১২টা জায়গায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা এলোমেলোভাবে ত্রাণ বিতরণ করছেন, তারা বাইরে দিয়ে চলে যাচ্ছেন। একটু কষ্ট করে ভেতরে গিয়ে বিতরণ করলে এ ধরনের পরিস্থিতি হতো না।
ত্রাণের জন্য নতুন-পুরনো কাপড় গাড়ি থেকে ছুড়ে দেওয়ার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি দিয়েছেন ‘রাস্তার দুই পাশজুড়ে, ফাঁকা মাঠের মধ্যে এ রকম হাজার হাজার কাপড় পড়ে আছে। অপরিকল্পিত ত্রাণ দেওয়ার কারণে গাড়ি থেকে ছুড়ে মারায় বৃদ্ধার হাতে পড়ছে বাচ্চার টি শার্ট, কিশোরের হাতে শাড়ি। এরই মধ্যে অনেকে আহতও হয়েছেন।’ তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ‘আন-অর্গানাইজড এইড ডিস্ট্রিবিউশন কাজের চেয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে বেশি। প্রশাসনের সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত। চলন্ত গাড়ি থেকে কেউ কেউ নোটের গোছা থেকে বের করে টাকা দিলে রোহিঙ্গারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। ধাক্কাধাক্কিতে গতকাল একটি বাচ্চা গাড়ির নিচে পড়তে গিয়েছিল।
এদিকে ব্যক্তিগতভাবে ত্রাণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোথায় কোন অ্যাকাউন্টে কিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে বিষয়ে সতর্ক করতে শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টুইটারে পোস্ট দিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম। দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মাধ্যমে ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কিভাবে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো যাবে, এজন্য টেলিফোন ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বরও দিয়েছেন তিনি।
ফিল্যান্স ফটোগ্রাফার বিনু মাহবুবা বলেন, ‘যে যার মতো বিতরণ করছে। শৃঙ্খলা কম, ব্যক্তিগতভাবে দেওয়া যাবে না বলা হলেও ব্যক্তিগতভাবে ত্রাণ বিতরণ চলছে।’ তিনি বলেন, ‘ত্রাণের ট্রাকে যে ভয়াবহ ছবি ব্যবহার করে ব্যানার ঝোলানো হচ্ছে, সেগুলোও দেখার কেউ নেই।