সিলেট জেলার জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন জেলা ও মহানগর কমিটির ত্যাগীরা মূল্যায়ন না পাওয়ায় মহানগরের ২৭টি ওয়ার্ড কমিটির ৪৯ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর শিবগঞ্জ এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণার পরদিন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহস্বেচ্ছাসেবক-বিষয়ক সম্পাদক জনাব সামসুজ্জামান পদত্যাগ করেছেন। এরপর নতুন কমিটির ১১ জন নেতাসহ বিভিন্ন উপজেলা, পৌর কমিটির আরও ১৫০ জনের পদত্যাগের ধারাবাহিকতায় তাঁরা পদত্যাগ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন ২০ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রায়হাত বকস। লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, গত ১৭ আগস্ট কেন্দ্র থেকে ঘোষিত জেলা ও মহানগর কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতাদের নাম দেখে তাঁরা মর্মাহত। উক্ত কমিটিতে দলের যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। তাঁরা তাঁদের সোনালি সময় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের পেছনে ব্যয় করেছেন এবং করছেন। যাঁরা বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে জীবন বাজি রেখেছেন, রাজপথে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, সংসার থেকে বিতাড়িত হয়েছেন আর আজ প্রিয় সংগঠনটি তাঁদের ঠাট্টা-তামাশায় রূপান্তরিত করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিগত নেতাকর্মীরা বলেন, ২১ নম্বর ওয়ার্ড শাখার আহ্বায়ক ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আবদুর রকিব, ২০ নম্বর ওয়ার্ড আহ্বায়ক রায়হাত বকস, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল হান্নান, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিলাল আহমদ খান, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাসুক আহমদ গাজি, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ২৭টি ওয়ার্ডের আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়কসহ কমিটিতে থাকা ৪৯ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুর রকিব গণমাধ্যমকে বলেন, নতুনভাবে ঘোষিত কমিটিতে ত্যাগীদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। এই কমিটি বাতিল করে পুনরায় তা গঠন ছাড়া এ পরিস্থিতি কাটানো সম্ভব না।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১৭ আগস্ট কেন্দ্র থেকে সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুল আহাদ খানকে আহ্বায়ক ও দেওয়ান জাকির হোসেন খানকে সদস্যসচিব করে জেলা কমিটি এবং আবদুল ওয়াহিদকে আহ্বায়ক ও আজিজুল হোসেনকে সদস্যসচিব করে মহানগর কমিটি ঘোষণা করা হয়।
দুটি কমিটিতে ত্যাগীরা স্থান পাননি অভিযোগ তুলে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহস্বেচ্ছাসেবক-বিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জামান পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে গত ১৮ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন করেন। এরপর গত ২১ আগস্ট স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটিতে থাকা ১১ জন পদত্যাগ করেন। ২৩ আগস্ট জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের মহানগরের সভাপতি ফয়েজ আহমদ দৌলত, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল গফফার পদত্যাগ করেন। ঠিক দুইদিন পর বুধবার স্বেচ্ছাসেবক দলের ১৫০ জন নেতা একই সাথে পদত্যাগ করেন।