সৌদি নেতৃত্বাধীন ইসলামিক সামরিক জোটে (আইএমএএফটি) অংশ নিলেও বাংলাদেশ কোনো যুদ্ধে জড়াবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জাতিসংঘের অধীনে হলেই কেবল সেনা পাঠাবে বাংলাদেশ। সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়া সফর শেষে বুধবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান শেখ হাসিনা।
সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে গত ১৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী ‘গাল্ফ শিল্ড-১ নামের ২৩ দেশের যৌথ সামরিক মহড়ার কুচকাওয়াজ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে গত ১৮ মার্চ শুরু হওয়া গাল্ফ শিল্ড-ওয়ানে বাংলাদেশও অংশ নেয়।
এ সফরের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোথায় কী হচ্ছে তা বলতে চাই না। আমাকে দাওয়াত দিয়েছে, চিঠি দিয়েছে। আমাদের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছি। তাদেরকে (সৌদি সামরিক জোট) বলেছি, আমরা কোনো যুদ্ধে জড়াতে চাই না।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, তাদের কিছু সমস্যা আছে, যেমন মাইন অপসারণ, সেই সঙ্গে কনস্ট্রাকশনের কাজ করা। বাংলাদেশে সেনাবাহিনীতে একটা কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ান আছে।‘সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটে গিয়ে মাইন পরিষ্কার বা অন্য কাজগুলো করবে বাংলাদেশের সেনারা। কিন্তু তারা যুদ্ধ করবে না। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে আমরা যাই, সে রকম হলে বাংলাদেশ যাবে। তা ছাড়া বাংলাদেশ কখনও যুদ্ধে জড়াবে না। এটা পরিস্কার কথা’- বলেন হাসিনা।
ক্ষমতায় থাকার, অর্থ-সম্পদ বানানোর এমনকি দেশের কল্যাণে নিজের জীবনের মায়া নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে এবং শান্তিরক্ষায়, কেবল বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের যে কোনো দেশের শান্তি রক্ষায় যে কোনো কথা বলার মতো সাহস আমি রাখি। আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে। এই কথাটা ভুলবেন না।’
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্রধানত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ৩৪টি মুসলিম প্রধান দেশ নিয়ে একটি নতুন সামরিক জোট গঠন করে সৌদি আরব। বাংলাদেশ এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হলেও মাঠ পর্যায়ের যুদ্ধে কোনো বাংলাদেশি সেনা পাঠানো হবে না বলে অনেক আগেই ঘোষণা দিয়েছেল বাংলাদেশ সরকার। তবে একইসঙ্গে পবিত্র মক্কা ও মদিনার ওপর কোনো হুমকি এলে সর্বদাই তার হেফাজতে সেনা প্রেরণে বাংলাদেশ প্রস্তুত বলেও জানানো হয়েছিল।
জোটের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আরব, দক্ষিণ এশিয়া আর আফ্রিকার দেশগুলো রয়েছে। তবে ইরানকে এই জোটের অর্ন্তভুক্ত করা হয়নি। জোটে নেই আফগানিস্তান, ইরাক এবং সিরিয়াও। জাতিসংঘের অধীনেই শুধু শান্তিরক্ষায় সৈন্য পাঠানোর একটা নীতিগত অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।