এখন থেকে হোমিওপ্যাথি ও ইউনানি চিকিৎসায় ডিগ্রিধারী কোনো ব্যক্তি নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন। তাদের ডাক্তার পদবি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে আদালত পরামর্শ দিয়েছেন এসব বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের। আজ শনিবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ সংক্রান্ত জারি করা রুল খারিজ করে ৭১ পৃষ্ঠার এই রায় প্রকাশ করেছেন।
এর আগে হোমিওপ্যাথি ও ইউনানি চিকিৎসায় ডিগ্রিধারীরা নামের পূর্বে ডাক্তার ব্যবহারের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছিলেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রুল জারি করলে রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এই রায় প্রদান করেন। রিটের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম ও অ্যাডভোকেট খোন্দকার নীলিমা ইয়াসমিন এবং অপরপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম।
রায়ে জানানো হয়েছে, দুঃখজনকভাবে এটি লক্ষণীয় যে, যেখানে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ এর ২৯ ধারা অনুযায়ী বিএমডিসি’র নিবন্ধনভুক্ত মেডিকেল বা ডেন্টাল ইনস্টিটিউট কর্তৃক এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া অন্য কেউ তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার (Dr.) পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। সেখানে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বিগত ২০১৪ সালের ৯ মার্চ তারিখের সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে ‘অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার’ (Alternative Medical Care) শীর্ষক অপারেশনাল প্লানের বিভিন্ন পদে কর্মরত হোমিওপ্যাথি, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কর্মকর্তাদের স্ব-স্ব নামের পূর্বে ডাক্তার (ডা.) পদবি সংযোজনের অনুমতি প্রদান করেছে, যা এক কথায় আইনের কর্তৃত্ব বহির্ভূত তথা বেআইনি। এ ছাড়া বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড কর্তৃক ২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন শাখায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদেরকে তাদের নামের পূর্বে পদবি হিসেবে ডাক্তার (Dr.) ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করাও বেআইনি।
প্রায় সময় দেখা যায়, সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে প্যারামেডিকেল, ফিজিওথেরাপি কিংবা হোমিওপ্যাথি পাস করে নামের সঙ্গে ডাক্তার লিখে সাইনবোর্ড ও প্যাড ব্যবহার করছেন। এটি বৈধ কিনা জানতে চাইলে রিটকারী আইনজীবীরা বলেন, ‘বিএমডিসির অনুমোদন ছাড়া অর্থাৎ এমবিবিএস ও বিডিএস (ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি) পাস ছাড়া কেউ ডাক্তার পদবি ধারণ করতে পারবেন না।’