আসামী ধরতে গিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলায় আহত র‍্যাব ও পুলিশ

0
সংঘর্ষ

লক্ষ্মীপুরের রামগতির বয়ারচর এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যকে আটকের খবরে র‌্যাবের সঙ্গে স্থানীয় এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে চার র‌্যাব সদস্য, দুই পুলিশ সদস্যসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ ক্যাম্পেও হামলা চালিয়েছে। এসময় র‌্যাবের ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেলও আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন।

এই ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সুপার আসম মাহাতাব উদ্দিন, রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর আলী, র‌্যাব কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সংঘর্ষ

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকালে রামগতির বয়ারচর এলাকায় ফরিদ উদ্দিনকে ধরতে অভিযান চালায় র‌্যাব। তার বিরুদ্ধে নোয়াখালীর হাতিয়া ও লক্ষ্মীপুরের রামগতি থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে জানায় তারা। তিনি তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী।

র‌্যাব সদস্যরা ফরিদ উদ্দিনকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় এলাকাবাসী বাধা দিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় র‌্যাবের সাথে স্থানীয় এলাকাবাসীর সংঘর্ষ বাধে। এতে র‌্যাবের এসআই মফিজুল ইসলাম, র‌্যাব সদস্য শাখাওয়াত হোসেন, শাহীন আলম ও শহীদুল ইসলামসহ ১০ জন আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে ক্যাম্পে নেয়ার পর স্থানীয়রা ক্যাম্পে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও হামলা করে। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত র‌্যাব সদস্যদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য আহতদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে রামগতির বয়ার চর ও নোয়াখালীর হাতিয়ার সাথে সীমানা বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রায়ই হামলা, পাল্টা হামলা, সংঘর্ষ ও ভাঙচুরসহ লুটপাটের ঘটনা ঘটে আসছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম সুমন জানান, সাদা পোশাকে চারজন লোক ইউপি সদস্য ফরিদের বাড়িতে গিয়ে তার হাতে হাতকড়া লাগিয়ে নিয়ে আসছিলেন। এসময় তার মেয়ের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে তাদেরকে আটক করে মারধর করে। তাদের ব্যবহৃত দুটি মোটর সাইকেলও ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

র‌্যাব-১১ এর লক্ষ্মীপুর ক্যাম্পের অধিনায়ক নরেশ চাকমা ঢাকাটাইমসকে জানান, র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার একটি টিম তথ্য সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে গেলে হামলার শিকার হন তারা। ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

তেগাছিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন ও রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন জানান, র‌্যাব সদস্যরা ইউনিফর্ম ছাড়া ফরিদ উদ্দিনকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় এলাকাবাসী মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় চার র‌্যাব সদস্য আহত হন। এক পর্যায়ে ফরিদ উদ্দিনকে নিয়ে যায় এলাকাবাসী। পরে আহত অবস্থায় র‌্যাব সদস্যদের উদ্ধার করে নেয়ার পর পুলিশ ক্যাম্পে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও হামলা চালায় স্থানীয়রা। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়।

পুলিশ সুপার আসম মাহাতাব উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান এসপি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে