মধ্যবিত্ত ছেলেরাও ভাল নেই!

0
মধ্যবিত্ত ছেলেরাও ভাল নেই

কোন ফ্যামিলিতে ভাইবোন দুজন থাকলে, দুজনকেই একইভাবে পড়াশোনা করায় ফ্যামিলি। মেয়েকে পারলে ডাক্তারি পড়ায় প্রাইভেটে অনেক টাকা খরচ করে। মেয়ের বয়স ১৮-২০ না হতেই ফ্যামিলির চিন্তা আসে মেয়েকে ভাল জায়গায় বিয়ে দিতে হবে, ১০-১৫ লাখ খরচ, সেগুলো যোগাড় করা শুরু হয়। অন্যদিকে ছেলের পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগেই সংসার চালানোর চাপ আসে, বয়স ২৭-২৮ বছর হলে “ভাল একটা চাকরি কর, বিয়ে করতে হবে” বলা হয়, মানে সংসার ও চালাতে হবে, বিয়ের খরচও যোগাড় করতে হবে। মেয়েকে এমন কিছু না বলেই তাঁর বিয়ের জন্য সারাজীবন সঞ্চয় করে পরিবার।

প্রশ্ন হল কেন? ছেলে যদি পড়াশোনা শেষ করে কামিয়ে সংসার চালিয়ে তারপর বিয়ে করতে পারে, একইভাবে পড়াশোনা করা মেয়ে কেন একই নিয়মের মধ্যে আসবেনা? স্কুল-কলেজে মেয়েরাই তো রেজাল্টে এগিয়ে থাকে, জীবনের দৌড়ে কেন তাঁদের এত ছাড়?

দেশে যৌতুক নিষিদ্ধ, এবং আইনত দণ্ডনীয়। কিন্তু স্বার্থের চেয়ে কয়েকগুণ কাবিন দাবি করা বৈধ। যে ছেলের ২০ হাজার টাকা ইনকাম নেই, তাঁর কাছে মেয়েপক্ষ দাবি করে ২০ লাখ টাকা কাবিন। এটা নাকি এখন স্ট্যাটাস সিম্বল। উচ্চকাবিনের যুক্তি থাকে “মেয়ে সুন্দর, শিক্ষিত”। শিক্ষিত হলে মুর্খের মত এই কাজ কেন? কাবিন ব্যাপারটা ইসলামিক নিয়ম হলেও ইসলামেও এরকম উচ্চ সমর্থন করেনা, কারণ কাবিনের অর্থ পরিশোধ না করলে বিয়ে বৈধ হয়না। সমস্যা এখানেও না, সমস্যা হল তালাক মেয়ে বা ছেলে যে পক্ষ থেকেই হউক, কাবিনের টাকা দিতেই হবে ছেলেদের, মুসলিম বিবাহ ও তালাক আইন ১৯৭৪। বাংলাদেশের বিবাহ বিচ্ছেদের ৭৩% আসে স্ত্রীর পক্ষ থেকে, বছরে ১০ হাজার বিচ্ছেদ হয়। হিসেব মিলিয়ে নিন। এরকম হাজার হাজার কেইস আছে যেখানে উচ্চকাবিনের জালে ফেঁসে নিঃস্ব হয়েছে অনেক পুরুষ। ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইন থাকলেও কাবিন নিরোধ আইন নেই। এ কেমন সমতা? ধরনের দুজনের সম্পর্ক ছিল ৩-৪ বছর, মেয়ে পরিবারের কথায় টাকাওয়ালা কাউকে বিয়ে করে ফেলল্বা অন্য কারণে সম্পর্ক বিচ্ছেদ করল। ছেলে রাগে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে তাঁদের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি ভাইরাল করবে হুমকি দিল। তাঁকে শাস্তি দেয়ার জন্য আছে ডিজিটাল আইন, পর্নোগ্রাফী আইন। সে এরেস্ট হবে, জেল খাটবে। কারণ সে মেয়েটার সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছে। এখানে ফেসবুকে আলোচনাও চলবে ছেলেটা কতটা খারাপ। আবার ধরুন ছেলেটার সাথে মেয়েটার সমস্যা, মেয়েটা সম্পর্ক শেষ হওয়ার পর ছেলেটার সাথে হওয়া অন্তরঙ্গ ভিডিও কলের স্ক্রিনশট, রেকর্ডিং, চ্যাটের স্ক্রিনশট ফেসবুকে আপলোড দিয়ে প্রমাণ করতে চাইবে ছেলেটা কতটা খারাপ। ফেসবুকবাসী এবারও ছেলের বিরুদ্ধেই থাকবে, বুঝতে চাইবেনা এগুলো মিউচুয়াল কনভার্সেশন। বরং মেয়েটাই ব্যক্তিগত ছবি পাবলিশ করে সমাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছে। মেয়ের ব্যক্তিগত কিছু ভাইরাল করা যদি ক্রাইম হয়, ছেলেদের ব্যক্তিগত কিছু ভাইরাল করা কি করে মেয়েদের ‘অধিকারের’ মধ্যে পরে? মেয়েদের কিছু ভাইরাল হলে সবাই ভাইরালকারীকে দোষই ভাবে, ছেলেটার কিছু ভাইরাল হলে কেন “আপু পাবলিক করেন শেয়ার দেই” বলে সবাই? ভয়ঙ্কর বিষয় হল দেশে নারী aনির্যতনের মামলার ৮০% ভুয়া, ভাড়ায় পাওয়া যায় মামলার বাদী, অন্য শত্রুতার জ্যার ধরে ধর্ষন, নির্যাতন, যৌতুক আর যৌন নিপীড়নের মিথ্যা মামলা করে। আইনের এরকম অপব্যহার অন্য কোথাও হয়না।

এটা ধ্রুব সত্য যে মেয়েদেরকে পিছিয়ে রেখেছে সমাজ, এটাও সত্য যৌতুক ও নির্যাতন প্রতিনিয়ত হচ্ছে, এবং এটাও সত্য যে ডজন খানেক আইন করেও বিচার পাচ্ছেনা বেশিরভাগ মেয়েরা, কিন্তু সে সব আইনের অপব্যবহার করে একদল ছেলেদের জীবন নষ্ট করে দিচ্ছে। তাই আইন হলে হবেনা, আইনে প্রয়োগ দরকার, আইনের অপব্যহার রোধ দরকার, আর পরিবার সমাজের সচেতন হওয়া দরকার। নারী অধিকার মানে পুরুষের অধিকার ক্ষুণ্ণ করা নয়!

সানজিদুল আলম