কলেজে ক্লাস না হওয়ায় মেয়ের পরীক্ষা খারাপ; মুক্তিযোদ্ধা পিতার অনশন

0
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনশন রত মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর

মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর এর মেয়ে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের স্নাতক ২য় বর্ষের ছাত্রী। নীতিবান এই মুক্তিযোদ্ধার আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। বেশ কষ্ট করে মেয়েকে লেখা পড়া করাচ্ছেন তিনি।মেয়ের ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষা খুব খারাপ হওয়ায় তিনি কষ্ট পেয়ে বললেন- আমি অতি কষ্ট করে তোমাকে লেখাপড়া করাচ্ছি , খেয়ে না খেয়ে লেখাপড়ার খরচ দিচ্ছি তবুও পরীক্ষা খারাপ করছ কেন!

মেয়ে জানায়- আমাদের কলেজে ক্লাস হয়না। ইংরেজি বিষয়ে কোন ক্লাস হয়নি। স্যাররা প্রাইভেট পড়ায়। কিন্তু আমিতো প্রাইভেট পড়িনি।

অসচ্ছ্বল পিতা মেয়েকে প্রাইভেট পড়ার টাকা দিতে পারেন নি বলে মেয়ে প্রাইভেট পড়তে পারেনি। তাই বলে কলেজের বেতন তো দিয়েছেন! সরকার কলেজের শিক্ষকদের বেতন দিচ্ছেন তবুও কেন ক্লাস হবে না! যে দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন সে দেশের এই অনিয়মের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পিতা আজ জেলা প্রশাসন ভবনে প্রশাসকের কক্ষের সামনে আড়াই ঘন্টা অনশন করেছেন। তার দাবী এই অনিয়মের যেন অবসান হয়। স্কুল কলেজ গুলোতে যেন ঠিকমতো ক্লাস হয়।

তবে এই অনশনের সময় জেলা প্রশাসক মহোদয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনশন রত মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর (ছবি কৃতজ্ঞতাঃ সাংবাদিক শামস শামীম)

অনুসন্ধানে জানা যায় দেশের অধিকাংশ সরকারি কলেজেই ঠিকমতো ক্লাস হয় না। ক্লাস না নিয়ে শিক্ষকদের মাঝে প্রাইভেট পড়ানোর প্রতি ঝোঁক বেশি। এমনকি অনেক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়লে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা ও ভাইভাতে ভালো নম্বর দেয়া হয় না। ফলে চরম বিপদে পড়ছে দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা। বাড়তি চাপ পড়ছে মধ্যবিত্তদের উপরে।

তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই মুক্তিযোদ্ধা পিতার অনশনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এই অনিয়ম বন্ধে ছাত্র সংগঠন গুলোকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানিয়েছেন অনেকে। একইসাথে সরকারের কঠোর নজরদারি দাবী করেন তারা।

 

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে