যেভাবে নিজের অপকর্ম চালিয়ে যেতেন ভন্ডপীর পিয়ারঃ বর্ণনা দিলেন নিজের মুখে

0

যেসব নারীরা নিজেদের জীবনে অসুখী ছিলেন,এবং একাকী জীবনযাপন করতেন তারাই ছিলেন মূলত ভন্ড পীর আহসান হাবীব পিয়ারের টার্গেট। পিয়ার এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে ভালো সম্পর্ক গরে তুলত এসব নারীদের সাথে তার মিষ্টি কথা আর সুন্দর চেহারার জালে ফাঁসিয়ে গড়ে তুলত অনৈতিক সম্পর্ক। এরপর চলত ভিডিও চ্যাটিং,তারপর সুযোগ বুঝে বাসায় ডেকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন। শুধু শারীরিক সম্পর্ক ই স্থাপন নয়, গোপনে এসব ভিডিও রেকর্ড করে রাখত ভন্ডপীর পিয়ার। তারপর চলত তার আসল প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল করে এসব নারীদের থেকে হাতিয়ে নিত মোটা অংকের টাকা। এভাবেই বর্ণনা দিলেন তার কুকীর্তির কথা ভন্ডপীর পিয়ার।

ভুক্তভোগী নারীদের থেকে জানা যায় তাদের কাছে দাবি করত মোটা অঙ্কের অর্থ। টাকা দিতে রাজি না হলে ইন্টারনেটে ভিডিও ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিত। এভাবেই গাড়ি-বাড়িসহ কোটি টাকার সম্পদ করেছে সে। সম্প্রতি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ইউনিটের কর্মকর্তারা গ্রেফতার করেন এই ভণ্ডপীরকে। গ্রেফতারের পর দু’দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে নিজ মুখে এসব কুকীর্তির বর্ণনা দেয় সে নিজের মুখে।

যেভাবে নিজের অপকর্ম চালিয়ে যেতেন ভন্ডপীর পিয়ার, বর্ণানা দিলেন নিজের মুখে

আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে ভণ্ডপীর এর স্বীকার করে তাহমিনা ও মিতা নামের দুই নারীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাছাড়াস ও টাকার বিনিময়ে নারীদের বিশেষ করে যারা একাকী জীবনযাপন করেন তাদের সঙ্গে ভিডিও চ্যাটিং করত আর ওসব ভিডিও মাধ্যমে চলত অনৈতিক কাজ। এ ছাড়া সাংসারিক ও পারিবারিক জীবনে যেসব নারী নানা সমস্যায় ভুগছেন তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক ও গড়ে তুলত। এভাবেই শতাধিক নারীকে ফাঁদে ফেলে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নেয় পিয়ার, আর এসব প্রতারিত নারীদের টাকা দিয়েই পিয়ার আজ কোটিপতি বলে স্বীকার করে নেন তিনি।

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আরো বলেন, নিজের সুন্দর চেহারা এবং ইসলামি জ্ঞানকে অপব্যবহার করে অসংখ্য মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে এই ভণ্ডপীর। বিভিন্ন মানুষকে সাহায্য করার কথা ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করে নিজের ব্যাংক ও বিকাশ নম্বরে মোটা অঙ্কের অর্থ এনে আত্মসাৎ করে সে। গত তিন বছরে এভাবেই গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছে এই প্রতারক। ওই কর্মকর্তারা আরও বলেন, তার প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত জনতা ব্যাংকের নতুন আরেকটি অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে কত টাকা লেনদেন হয়েছে সেটা জানা যায়নি। ইতিমধ্যে একটি একাউন্ট থেকে গত মাসে ২০ লাখ এর ও বেশি লেনদেন এর প্রমাণ পাাওয়া গেছে।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নাজমুল ইসলাম জানান, আদালতে নিজের মুখে কুকীর্তির বর্ণনা দিয়েছে ভণ্ডপীর। আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সে স্বীকার করে, দুই নারীর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের গোপন ভিডিও ধারণের কথাও অকপটে স্বীকার করেছে এ প্রতারক।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, তার প্রতারণার আরেকটি মাধ্যম ছিল ‘এএইচপি’ নামের অনলাইন টেলিভিশন। সেখানে বিভিন্ন ভিডিও আপলোড করে প্রতারণা করেছে। দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী এভাবে সে টেলিভিশন চালাতে পারে না। তাই তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

এর আগে বেশ কয়েক ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার জিন-ভূত তাড়ানোর নাম করে পর্ন ভিডিও ধারণকারী ও ভণ্ডপীর আহসান হাবিব পিয়ারকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিট। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঠালে দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। শনিবার এই ভণ্ডপীরকে আদালতে উপস্থাপন করা হলে নিজ মুখে নানা কুকীর্তির বর্ণনা দেয় সে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে