আগামী অক্টোবরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। রফিকুল ইসলাম বলেন, আগামী অক্টোবর মাসে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। তবে অক্টোবরের কত তারিখে তফসিল করা হবে তা এখনই বলছি না।
নির্বাচন কমিশনার আরো জানান, মোট তিনশ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৫টি আসনের সীমারেখায় পরিবর্তন এনেছে নির্বাচন কমিশন। ঢাকার কোনো আসনের সীমানা পরিবর্তন হয়নি বা করা হয়নি। কারণ একটি সীমানার পরিবর্তন করা হলে, এর সঙ্গে আরো পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়। প্রথম খসড়ায় ৪০টি সংসদীয় আসনের সীমারেখায় পরিবর্তন আনার কথা ভাবা হলেও, পরে ২৫টি আসনে পরিবর্তন আনা হয়।
এই পরিবর্তন সরকার বা স্থানীয়দের চাপে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এসব আসন নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত নেওয়া হয়েছে। সব কিছু ভেবে নির্বাচন কমিশন ২৫টি আসনে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো. নূরুল হুদা বলেছেন, গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনকে জাতীয় নির্বাচনের মতোই সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজধানীর আগারাগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে দুই সিটির নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে সিইসি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘সংসদ নির্বাচন সন্নিকটে। সেই সঙ্গে ঢাকার পাশের সিটি কর্পোরেশন গাজীপুর এবং খুলনায়ও নির্বাচন হবে। নির্বাচনগুলোকে কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।’
এ সময় তিনি গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আসন্ন নির্বাচন সফল করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চান।
সিইসির সভাপতিত্বে বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, মোহাম্মদ হেলাললুদ্দীনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, ‘বিগত দিনে আপনাদের সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচন সফল হয়েছে। আশা করি এই নির্বাচনও সফল হবে। এ জন্য আপনাদের পরামর্শ প্রত্যাশা করছি।’
আগামী ১৫ মে খুলনা ও গাজীপুর সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৪২৫ জন।
অপরদিকে ৩১টি সাধারণ ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৪ জন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে ৭ জন, ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৫৬ জন ও ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ সিটিতে মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের মো. জাহাঙ্গীর আলম, ২০ দলীয় জোট ও বিএনপি মনোনীত হাসান উদ্দিন সরকার, ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. জালাল উদ্দিন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মো. রুহুল আমিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহমদ।
খুলনা সিটিতে মেয়র এবং কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিলিয়ে মোট ১৯১ জন প্রার্থী নির্বাচনের চূড়ান্ত লড়াইয়ে মাঠে রয়েছেন। মেয়র প্রার্থী ৫ জন, ১৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৪৮ জন কাউন্সিলর এবং চারটি সংরক্ষিত আসনে ৩৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদে যে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তারা হলেন- আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক, বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জাতীয় পার্টির এসএম শফিকুর রহমান মুশফিক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির মিজানুর রহমান বাবু।