যেভাবে নিজেকে সাজাবেন লিংকডইনে!

0
যেভাবে নিজেকে সাজাবেন লিংকডইনে

আজকাল অনেক প্রতিষ্ঠানই প্রার্থীর লিংকডইন প্রোফাইল দেখতে চায়। এতে করে সহজ হয়ে যায় আপনার কাজ, সম্ভাবনা আর আগ্রহ সম্পর্কে মানুষের জানাটা। বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ কোটির বেশি মানুষ ক্যারিয়ারে পথচলা সাবলীল করতে লিংকডইন ব্যবহার করে আসছেন। পেশাজীবীদের জন্য তৈরি এই সাইটে নিজের সব তথ্য রাখার মাধ্যমে অনেক সময় চাকরি পাওয়াটা সহজ হয়ে উঠে। এই লেখায় থাকছে লিংকডইন প্রোফাইলের গুরুত্বপূর্ণ নানান দিক সম্পর্কে।

LinkedIn বর্তমানে সবার কাছেই সুপরিচিত একটি নাম হয়ে ওঠেছে। পেশাদারদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় কমিউনিটি হচ্ছে এই লিংকডইন। পেশাজীবীদের কাছে কাজের এক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হলো এই মাধ্যম। বর্তমানে করপোরেট জগতে নিয়োগকর্তারা চাকরিপ্রার্থীর যোগ্যতা যাচাইয়ে লিংকডইনের সহায়তা নেন। একজন কর্মীর পেশাগত দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা পেতে তার লিংকডইন একাউন্টই যথেষ্ট। একটি লিংকডইন একাউন্ট আপনাকে ভালো একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেতে সাহায্য করবে। আজকাল অনেক প্রতিষ্ঠানই প্রার্থীর লিংকডইন প্রোফাইল দেখতে চায়। গুগলে আপনার নাম লিখে সার্চ দিলেই চলে আসবে আপনার প্রোফাইল। এতে করে আপনার কাজ, সম্ভাবনা আর আগ্রহ সম্পর্কে মানুষের জানাটা আরও সহজ হয়ে যায়। বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ কোটির বেশি মানুষ ক্যারিয়ারে পথচলা সাবলীল করতে লিংকডইন ব্যবহার করে আসছেন। পেশাজীবীদের জন্য তৈরি এই সাইটে ইচ্ছে করলেই নিজের সব তথ্য রাখা যায়।
এই লেখায় থাকছে লিংকডইন প্রোফাইলের গুরুত্বপূর্ণ নানান দিক সম্পর্কে।

নাম

ফেসবুকের উদাহরণ দিয়েই শুরু করা যাক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আমরা অনেক ধরণেরই নকল নাম ব্যবহার করে থাকি, যেমন: ভাবুক আবির, ভদ্র ছেলে জামিল। এটা ভুলেও করা যাবেনা। আপনার লিংকডইন একাউন্টে ব্যবহার করুন আপনার আসল নাম, যেটি দিয়েই আপনার পরিচিতি। আপনার সার্টিফিকেট নাম। লিংকডইনে এই বিষয়টি সবচেয়ে প্রধান এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নামের মাধ্যমেই হয়ে ওঠবে আপনার প্রফেশনাল লাইফের পরিচয়, পেশাদারিত্ব ইত্যাদি।

লিংকডইন প্রোফাইল বানাবেন যেভাবে

প্রোফাইল ছবি

লিংকডইন প্রোফাইলে অবশ্যই আপনার নিজের প্রফেশনাল ছবি ব্যবহার করবেন। আপনার ছবিই প্রকাশ করবে আপনার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা। ফেসবুক, টুইটার কিংবা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায় প্রায় সব ব্যবহারকারীই তাদের সাধারণ ছবি ব্যবহার করে থাকেন। লিংকডইনে সেটা ভুলেও করা যাবেনা। ব্যবহার করতে হবে প্রফেশনাল ছবি। সেলফি মোটেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং লিংকডইনে সব সময়ই প্রফেশনাল ছবি দিতে হবে। অন্যদিকে কভার ছবিতে এমন ছবি রাখার চেষ্টা করতে হবে, যা দেখে সবাই আপনার কাজ সম্পর্কে একটি ভালো এবং পরিষ্কার ধারণা পাবে ও যেটা আপনার যোগ্যতা সম্পর্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

লিংকডইন প্রোফাইল বানাবেন যেভাবে

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

লিংকডইনের অন্যতম প্রয়োজনীয় আপনার পরিচিতি। আপনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনার উপস্থাপনায় আপনার প্রকাশ পাবে আপনার পেশাদারিত্ব। আপনার নাম সার্চ করলেই সবার আগে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি উঠে আসবে। নাম কিংবা আপনার প্রতিষ্ঠানের নামেই সীমাবদ্ধ না রেখে অন্যান্য বিষয় যুক্ত করে সাজিয়ে তুলুন আপনার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি যা আপনার প্রোফাইল এবং আপনাকে অনেকখানিই ফুটিয়ে তুলবে। সংক্ষিপ্ত পরিচয়ে ফুটিয়ে তুলুন আপনার জীবনের পথচলার গল্প, কোন কোন সেক্টরে কাজ করছেন, আপনার লক্ষ্যবিন্দু, আপনার পরিকল্পনা ইত্যাদি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা

শিক্ষাগত যোগ্যতার অংশ প্রকাশ করবে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার বিস্তারিত। মনে রাখবেন কখনোই অতিরিক্ত কিংবা বাড়িয়ে কিছু লিখবেন না। আপনার চলমান শিক্ষাগত যোগ্যতাও ফুটিয়ে তুলুন সুন্দরভাবে। তুলে ধরুন আপনার আগ্রহ, দক্ষতা, উল্লেখযোগ্য বিষয় যেগুলো নিয়ে পড়ালেখা করেছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করার সময় বিশেষভাবে খেয়াল রাখুন বানানে। অবশ্যই যাচাই করে সঠিক বানানটিই লেখবেন। আপনার বৃত্তি কিংবা কোনো পুরস্কার পেয়ে থাকলে সেটাও উল্লেখ করতে পারেন। অনেক সময় দেখা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে, এটি ভুলেও করবেন না। প্রয়োজনে আপনার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল কোনো ডকুমেন্ট থেকে যাচাই করে নিশ্চিত হয়ে লেখুন।

অভিজ্ঞতা

কাজের অভিজ্ঞতা। এটি প্রকাশ করবে আপনার কাজ সম্পর্কে ধারণা। কাজের অভিজ্ঞতা লিংকডইন প্রোফাইলকে অনেক সমৃদ্ধ করে। অভিজ্ঞতার জায়গাটিতে উল্লেখ করুন আপনার কাজ সম্পর্কে, আপনি কি কি করেছিলেন, কি কি করছেন বর্তমানে ইত্যাদি বিষয়গুলো। যেমন টিউশনি করান কিংবা যুক্ত আছেন ইভেন্ট রিলেটেড কাজের সাথে বা করছেন ইন্টার্নশিপ। এছাড়াও লেখালেখি, ভিডিও বানানো, ছবি তোলা ইত্যাদি দক্ষতার সাথে কাজ করছেন এমন তথ্য যুক্ত করুন অভিজ্ঞতার জায়গায়। অভিজ্ঞতা আপনার পেশাদারিত্ব বাড়াতে অধিক ভূমিকা পালন করবে। হতে পারে, কোনো একটি অভিজ্ঞতার কারণে আপনার জন্য লিংকডইনের সাহায্যেই অপেক্ষা করছে দারুণ কোনো চাকরির সুযোগ।

যোগাযোগ তথ্য

যোগাযোগের তথ্য এটি আপনার সাথে যোগাযোগের জন্য মাধ্যম হিসেবে ভূমিকা রাখবে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন আপনার ইমেইল এড্রেসটি কেননা এটি অধিক প্রফেশনাল। অবশ্যই একটি ইমেইল ব্যবহার করবেন। অনেকেরই একাধিক ফোন নম্বর বা ই–মেইল অ্যাকাউন্ট থাকে যা মোটেই ঠিক নয়। একটি এড্রেস ব্যবহার করুন যেখানে আপনাকে সব সময় পাওয়া যাবে। সেই সাথে গড়ে তুলতে হবে ইমেইলটি প্রতিনিয়ত চেক করার অভ্যাস। দ্রুত এবং সাবলীল রিপ্লাই প্রাপকের মনে আপনার পেশাদারি ও দক্ষতা সম্পর্কে ভালো একটি ধারণা তৈরি করতে সাহায্য করবে।

গ্রুপে জয়েন করুন

আপনার যোগাযোগের প্রসার বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন গ্রুপে জয়েন করার বিকল্প নেই। আবার সব গ্রুপই আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হয় না। লিংকডইনে প্রতি সেকেন্ডে লাখো গ্রুপ তৈরি হয়। গ্রুপে কানেকশন তৈরি অনেক বড় একটি দক্ষতা। তাই সঠিক গ্রুপ নির্ধারণ করাটা একটু সময়ের ব্যাপার হলেও এটি আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। যাচাই-বাছাই করে আপনার পেশা, দক্ষতা ও আগ্রহের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ গ্রুপগুলোয় যোগ দিন। গ্রুপে সদস্য যত বেশি হয়, তত ভালো। কানেকশন রিকোয়েস্ট করার সময় অবশ্যই ভদ্রতামূলক মেসেজ প্রদান করুন। ভালো গ্রুপে একটি পোস্টই আপনাকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারে।

কি-ওয়ার্ড

আপনার দক্ষতাগুলোর বিবরণ দেওয়ার সময় বিভিন্ন ‘কি-ওয়ার্ড’ ব্যবহার করুন। আপনার নিয়োগকর্তা কী কী দক্ষতা প্রত্যাশা করবেন আপনার কাছে, সেগুলো কি-ওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করুন। তাহলে নিয়োগকর্তা আপনার সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা পাবে।

এবার আপনার প্রোফাইলে নজর দিন। আপনার প্রোফাইলটি দেখতে ভালো লাগছে কি? নিজেই নিজের প্রোফাইল বিচার করুন। বানান, ব্যাকরণ ইত্যাদি যাচাই করে দেখুন। দীর্ঘ ও কঠিন বাক্য এড়িয়ে চলুন। এতে আপনার একাউন্ট ভিজিটকারীদের আপনার সম্পর্কে বুঝতে কোনো প্রকার অসুবিধা ও বিরক্তবোধ অনুভব না হয়ে আপনার সম্পর্কে ভালো ইম্প্রেশন তৈরি হবে ।