ব্লু হোয়েলের ন্যায় আতঙ্ক সৃষ্টিকারী নতুন গেম ‘মমো’

0
ব্লু হোয়েলের ন্যায় আতঙ্ক সৃষ্টিকারী নতুন গেম ‘মমো’

হোয়াটস্যাঅ্যাপ মেসেঞ্জারের মাধ্যমে অনলাইনে হাজির হয়েছে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী নতুন গেম ‘মমো’। ল্যাটিন আমেরিকায় এর বিরুদ্ধে সতর্কতা জারী করা হয়েছে। তবে ইতিমধ্যেই এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপজুড়ে এর বিস্তৃতি ঘটেছে।

আলোচিত ‘ব্লু হোয়েলে’র সাথে বিশেষজ্ঞরা মমো’র তুলনা করছেন। বলা হয় ভয়াবহ এই খেলা নিয়ে যেতে পারে মারাত্মক পরিণতির দিকে। মমো দেখতে শিহরণ জাগানিয়া। গায়ের চামড়া ফ্যাকাসে। ঠিকরে বের হয়ে আসা চোখ আর বাইরের দিকে প্রসারিত লাল লাল ঠোট।

আতঙ্ক সৃষ্টিকারী নতুন এই মমো যেকোন সময়ে আপনার কম্পিউটারের পর্দায় ভেসে উঠতে পারে। আপনাকে গেম খেলতে প্রলুব্ধ করতে পারে।

জনগণকে সতর্ক করে ল্যাটিন আমেরিকায় কর্তৃপক্ষ বলেছে এ গেম মেসেজের মাধ্যমে অন্যকে না দেয়ার জন্য। তারা বলছে, এই অনলাইন গেম কাউকে অনেক দুর নিয়ে যেতে পারে।

মেক্সিকোতে অনলাইন অপরাধ নিয়ে কাজ করা একটি পুলিশ ইউনিট বলছে, এটা শুরু হয়েছে ফেসবুকে। একদল লোক একে অন্যকে প্রলুব্ধ করে একটি অপরিচিত নাম্বারে কল দেয়ার জন্য।

এই বিষয়ে মেক্সিকো পুলিশ বলছে, অনেক ব্যবহারকারী জানিয়েছে যে মমো’তে বার্তা পাঠানোর পর সে সহিংস ছবি পাঠাবে। অনেকে হুমকিমূলক বার্তা পেয়েছেন বা ব্যক্তিগত তথ্যও ফাঁস হয়ে যাচ্ছে।

এই মমো আসলো কোথায় থেকে?

রেডিট নামের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বলছে, তাদের সবচেয়ে পড়া হয়েছে এমন পোস্টগুলোর একটি হলো ‘হোয়াটসঅ্যাপ বালিকা মমো কি ও কে?

উত্তর ছিলো, একজন ‘ইনস্টাগ্রাম’ থেকে স্প্যানিশভাষী কোন দেশ থেকে একটি ছবি নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট তৈরি করে। লোকজন সেখান থেকে একটি কন্টাক্ট নাম্বার পায় ও গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে তুমি একে স্পর্শ করলে সে তোমাকে গ্রাফিক ছবি ও বার্তা দেবে। কেউ কেউ বলেন যে আপনার সব ব্যক্তিগত তথ্যে তার প্রবেশাধিকারের সুযোগ আছে।

এখন পর্যন্ত যতটুকু জানা যাচ্ছে, হোয়াটসঅ্যাপ গেমটি জাপানের কোড সম্বলিত তিনটি ফোন নাম্বারের, কলম্বিয়ার কোড সম্বলিত দুটি আর মেক্সিকোর কোড সম্বলিত আরেকটি নাম্বারের সাথে সংযুক্ত। আর ছবিটি নেয়া হয়েছে টোকিও’র একটি প্রদর্শনী থেকে। এটা জানা খুবই কঠিন যে গেমটি আসলে কোথা থেকে এসেছে কিন্তু এটি এখন জানা যে ছবিটি জাপানের মমো’কেই প্রতিনিধিত্ব করতে ব্যবহার করা হয়।

মমো’র ভীত চাহনির মুখ একটি পাখি মানবীর মূর্তিকে তুলে ধরে। ২০১৬ সালে টোকিওতে ভ্যানিলা গ্যালারীতে একটি প্রদর্শনীর অংশ ছিলো এটি। দু’বছর আগে আরেকটি প্রদর্শনীতে মমো ছিলা বিশেষ আকর্ষণ। বহু মানুষ মমোর সাথে ছবি তুলেছে এবং এমন বহু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত হয়েছে। পরে মেক্সিকোর পুলিশ বলছে কেউ ইনস্টাগ্রাম থেকে ওই অনুষ্ঠানের ছবি নিয়ে সেটাকেই কেটে কুটে এমন বানিয়েছে।

আতঙ্ক কেন?

মেক্সিকোর পুলিশ বলছে অপরিচিত কোন নাম্বারের সাথে যোগাযোগ ভালো আইডিয়া না। তবে এর বাইরেও অন্তত পাঁচটি কারণে মমো কে উপেক্ষা করা উচিত বলে মনে করে তারা। সেগুলো হচ্ছে: ব্যক্তিগত তথ্য চুরির সম্ভাবনা; সহিংসতা, এমনকি আত্মহত্যায় প্রলুব্ধ করার সম্ভাবনা; ব্যবহারকারী হয়রানির শিকার হওয়ার সম্ভাবনা; ব্যবহারকারী চাঁদাবাজির শিকার হওয়ার সম্ভাবনা; ব্যবহারকারী মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।

তথ্য সূত্র : বিবিসি বাংলা।