সৌদি আরবের হাইল প্রদেশে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৭ বাংলাদেশির মৃত্যু

0
বাংলাদেশির মৃত্যু

সৌদি আরবের হাইল প্রদেশের আল হোলাইফা শহরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে সহোদরসহ সাত বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। বুধবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে কুমিল্লার চারজন, লক্ষ্মীপুরের দুইজন ও ফেনীর একজন বলে জানা গেছে। নিহতদের পারিবারিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এব্যাপারে রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে এখনো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশির মৃত্যু
বিস্ফোরণে নিহত সহোদররা হলেন- চৌদ্দগ্রামের বাতিসা ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের মরহুম আবদুল হকের ছেলে এমরানুল হক সোহেল (৩৪), ইমামুল হক মুন্না (২২) এবং লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার করইতোলা বাজার সংলগ্ন চর লরেন্স গ্রামের নেছার আহম্মদের ছেলে জসিম উদ্দিন (২৬) ও মো. ইব্রাহিম (২৩)।

অপর নিহতদের মধ্যে চৌদ্দগ্রামের গুণবতী ইউনিয়নের দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. সোহেল (৩০), ফেনী শহরের উত্তর বিরিঞ্চি এলাকার ইলিয়াছ মেম্বার বাড়ির মো. মহিউদ্দিন রাশেদের (৩৫) নাম জানা গেছে। দুর্ঘটনায় নিহত আরেকজন চৌদ্দগ্রামের বাসিন্দা জানা গেলেও নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নিহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সৌদি আরবের হাইল জেলার হোলাইফা শহর এলাকায় চাকরি করতেন নিহত এমরানুল হক মুন্না ও সোহেল। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার রাতে খাবার রান্না ও খাওয়া শেষে একই কক্ষে সাত বাংলাদেশি ঘুমিয়ে পড়েন। বুধবার ভোরে হঠাৎ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে তাদের প্রাণহানি হয়।

বুধবার বিকেলে বাতিসা ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের দুই সহোদর এমরানুল হক সোহেল ও ইমামুল হক মুন্নার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের মা সেলিনা বেগম মূর্ছা যাচ্ছেন। তিনি বলছেন, আমি এখন কারে নিয়ে বাঁচবো। দুই ছেলের স্বপ্ন ছিলো নতুন ঘরের কাজ শেষ হলে তারা বাড়ি আসবে। মায়ের এ অবস্থায় তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা যেন সবাই হারিয়ে ফেলেছেন।

লক্ষ্মীপুরে নিহতদের চাচা করইতোলা বাজারের উপকূল ল্যাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজির আহমেদ হেলালী তার দুই ভাতিজার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সৌদি প্রবাসী স্বজনদের মাধ্যমে তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছেন।

আর বিস্ফোরণে নিহত ফেনীর রাশেদ দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। জিহান (৭), সাফওয়া (৫) ও আলিফ নামে তার তিনটি সন্তান রয়েছে।

সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত লক্ষ্মীপুরের দু্ই ভাই হারিয়ে পাগল প্রায় নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম। অন্যদিকে মা কুলফুরের নেছা, স্ত্রী শিখা মজুমদার বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন।

নিহত রাশেদের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, এমন হবে জানলে ছেলেকে কখনোই বিদেশ পাঠাতাম না। ছেলের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।