সৌদিআরবে নারী রোবট ‘সোফিয়া’কে নাগরিকত্ব দেওয়ার পর সেখানে এখন তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই রোবট একজন সৌদি নারীর চেয়েও বেশি অধিকার ভোগ করছে কিনা?
বিবিসি জানায়, সৌদি আরবের রিয়াদ নগরীতে গত সোমবার এক অনুষ্ঠানে এই রোবটটি প্রদর্শন করা হয়। প্রদর্শনীতে উপস্থিত শত শত প্রতিনিধি রোবটটি দেখে এতটাই মুগ্ধ হন যে সেখানে সঙ্গে সঙ্গেই এটিকে সৌদি নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। এরপর রোবট নারী ‘সোফিয়া’র ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়।
কিন্তু অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন, একজন সৌদি নারীর তুলনায় কিভাবে ‘সোফিয়া’ এত বেশি অধিকার ভোগ করছে।
হংকং এর একটি কোম্পানি ‘হ্যান্সন রোবোটিক্স’ সোফিয়া নামের রোবটটি তৈরি করেছে। ‘সোফিয়া’ ইংরেজীতে কথা বলে।
কিন্তু তার মাথায় হিজাব বা পরনে আবায়া (বোরকা সদৃশ আচ্ছাদন) নেই। অথচ যে কোন সৌদি নারীকে বাইরে বেরুতে হলে এসব পরেই বেরুতে হয়।
‘সোফিয়া’কে সৌদি নাগরিকত্ব দেওয়ার খবরটি দেখে প্রথমত সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশিরভাগ প্রতিক্রিয়া ছিলো বেশ ইতিবাচক। এই খবরটি টুইটারে ৩০ হাজার বার শেয়ার হয়। কিন্তু এর পরেই শুরু হয় এটি নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ।
‘সোফিয়া কলস ফর ড্রপিং গার্ডিয়ানশীপ’ অর্থাৎ সোফিয়া তার ওপর অভিভাবকের খবরদারি তুলে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে বলে আরেকটি বিদ্রুপাত্মক পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে থাকে।
সৌদি রীতি অনুযায়ী, কোন মেয়েকে বাইরে যেতে হলে সঙ্গে অবশ্যই একজন পুরুষ অভিভাবক থাকতে হবে।
অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, সোফিয়ার কোন পুরুষ অভিভাবক নেই, সে আবায়া (বোরকা) পড়ে না, মাথায় কাপড় দেয় না। এটা কিভাবে সম্ভব?
একটি নারী রোবটের অধিকার কি একজন সৌদি নারীর চেয়ে বেশি?
যে রকম দ্রুততার সঙ্গে ‘সোফিয়া’কে সৌদি নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে সেটি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে।
সাংবাদিক মুর্তজা হোসেন লিখেন, যে ‘কাফালা’ (অভিবাসী) শ্রমিকরা তাদের প্রায় পুরোটা জীবন এখানে কাটাচ্ছেন তাদেরও আগে এই রোবট সৌদি নাগরিকত্ব পেয়ে গেল?
ব্রিটিশ-লেবানীজ সাংবাদিক কারিম চাহায়েব লিখেন, লাখ লাখ মানুষ যখন রাষ্ট্রবিহীন নাগরিক হিসেবে ধুঁকছে, তখন একটি রোবট সৌদি নাগরিকত্ব পেল।