ইয়েতি অভিযান

0
ইয়েতি অভিযান

#ইয়েতি_অভিযান
#ট্রিপল_ধামাকা

ট্রেইলার দেখার দিন থেকেই অপেক্ষা করছিলাম এই মুভিটা দেখার জন্য। একে তো কাকাবাবু, দুইয়ে সৃজীত মুখার্জি আর তিনে হলো প্রসেনজিৎ। এই মুভি মিস দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। অথচ আমি জানতামই না এটা জাজ এর সাথে জয়েন্ট প্রোডাকশন ছিল। এর কারণও আছে অবশ্য। ট্রেইলারে যা দেখাইছে, কোন প্রোডাকশন থেকে কিভাবে রিলিজ হচ্ছে কিছুই দেখার অবকাশ পাইনাই।

ধন্যবাদ Rejon Khan ভাইকে। তার পোস্টের কারণেই জানতে পারলাম এটা বাংলাদেশে আজ মুক্তি পাচ্ছে। আরও ধন্যবাদ Syed Nazmus Sakib ভাইকে। কেউ মুভিটা দেখাবে কিনা জিজ্ঞেস করে পোস্ট দিয়েছিলাম। সাকিব ভাই ফোন দিয়ে বলল ‘আদি ভাই চলে আসেন, আড়াইটার শো’। ব্যস, এখন বসে রিভিউ লিখছি।
ইয়েতি অভিযান
অনেক হয়েছে বকবক এবং কৃতজ্ঞতা স্বীকার। এবার শুরু করা যাক। আগেই বলেছি এটা আমার জন্য ছিল ট্রিপল ধামাকা। সৃজীত, কাকাবাবু এবং প্রসেনজিৎ। মুভিটা বানানো হয়েছে কাকাবাবু সিরিজের ‘পাহাড়চূড়ায় আতঙ্ক’ বইয়ের কাহিনী নিয়ে। যদিও বইটা পড়িনি, কিন্তু দেখতে তো বাঁধা নাই।

পুরো মুভিটাই নেপালে দৃশ্যায়ন করার কথা থাকলেও জটিলতার কারণে সেটা করা হয়েছে সুইজারল্যাণ্ডে। সুইজারল্যান্ডে শুট হলেও দেখানো হয়েছে নেপালকেই। কাহিনীর শুরুটাও নেপালেই। মাউন্ট এভারেস্টের ভিউ পয়েন্টের কাছে এক জায়গায় হঠাৎ করেই একজন নিখোঁজ। কেন কিভাবে নিখোঁজ হল কেউ বলতে পারেনা। ইভেন তার বডিটাও কেউ খুঁজে পায়নি। তবে তার লেখা ডায়েরী পাওয়া গেছে, যেখানে সে অজ্ঞাত এক প্রাণীর কথা লিখে গেছে।

রাজা রায় চৌধুরী ওরফে কাকাবাবু কেন হঠাৎ এভারেস্ট দেখতে যাচ্ছেন তা সন্তুর মাথায় ঢুকছেনা। ২৯ হাজার ২৯ ফিট উচ্চতায় উঠা তো চাট্টিখানি কথা না। এর সাথে নিশ্চয় কোনো রহস্য জড়িয়ে আছে। কাকাবাবু শুধু শুধু এভারেস্ট জয় করতে যাচ্ছেন না নিশ্চয়। রহস্যটা কি তাহলে?

রহস্য জানতে হলে ফিরে যেতে হবে ১৯৩০ সালের চীনে। চীনের পিকিং এ একটা স্থানীয় বাজার থেকে হার্ভার্ডের এক প্রফফেসর তিনটা দাঁত কিনে আনেন। যদিও বিক্রেতা বলেছে এটা বড় সাইজের পাহাড়ী বাঁদরের দাঁত। কিন্তু ঐ প্রফেসর বুঝতে পারেন এটা আসলে ইয়েতির দাঁত। তার মানে কিংবদন্তীর ইয়েতী আসলেই ছিল। এর আগে সবাই অবশ্য ড্রাগনের মত ইয়েতিকেও মিথ হিসেবেই জানতো। কিন্তু হার্ভার্ডের ঐ প্রফেসরের বিশ্বাস ইয়েতি আসলেই ছিল। হয়তো এখনো আছে, কে জানে। আচ্ছা, এভারেস্টের ভিউ পয়েন্টের ওখানে যে মানুষ নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে তা ইয়েতির কান্ড না তো?

ইয়েতি কি জিনিষ? কথিত আছে ইয়েদি বাঁদর প্রজাতির এক প্রাণী। লোমশ। পাগুলো মানুষের মতই, আঙ্গুল চারটা। তবে শরীরটা হাতির সাইজের। হিমালয়ে বাস করে।

মুভির প্রথম শটটা দেখেই নড়চড়ে বসেছিলাম আমি। সেই একটা শট ছিল। চারিদিকে বরফাচ্ছাদিত পাহাড়। মুভি দেখতে দেখতে বার বার ভাবছিলাম, ইশ কখনো যদি যেতে পারতাম ঐ জায়গাটায়। গ্রাফিক্স এবং এডিটিং চমৎকার ছিল। শ্যামলি সিনেপ্লেক্সে সাউন্ড সিস্টেমে আগেও ঝামেলা মনে হয়েছে, এই মুভি দেখার সময়ও সেটা ভালোভাবে বুঝতে পারলাম। অতিরিক্ত ভলিউম দিয়ে রাখলে যেমন একটু ফাটা ফাটা লাগে তেমন ফাটা ফাটা লাগছিল। এজন্য কিছুটা হলেও, না কিছুটা না অনেকটাই মজা নষ্ট হয়েছে। মুভিতে প্রসেনজিতের মেকাপ এবং অভিনয় ছিল দুর্দান্ত। মনে হচ্ছিল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাকে মাথায় রেখেই কাকাবাবুর কাহিনী লিখেছিলেন। সন্তুও আগের থেকে বড় হয়েছে, কারাতে শিখেছে ভালভাবে, প্রয়োগও করেছে এবার ভালভাবে। ক্যামিও রোলে আমাদের ফেরদৌস ছিল। এছাড়া যীশু আর আমাদের বিদ্যা সিনহা মীমও ভাল অভিনয় করেছে।
হ্যাপ্পি ওয়াচিং।

ভালো কথা, যারা আদালত বা কেডি পাঠকের ফ্যান তারা কিঞ্চিৎ স্পয়লার খেয়ে যেতে পারেন।

লেখকঃ মাসুম আহমেদ আদি‎

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে