যা দেখতে পাবেন ; কৃত্রিম ম্যাংগ্রোভ বন , বন্য হরিণ , মনপুরার আশেপাশের সাগরের মাঝে বিচ্ছিন্ন চর, মেঘনার মোহনা ইত্যাদি। ক্যাম্পিং করতে চাইলে এটি একটি আদর্শ স্থান।
যেভাবে যাবেন>> ঢাকার সদরঘাট থেকে ফারহান ৩/৪ তাসরিফ ১/২ প্রতিদিন দুটি লঞ্ছ ছেড়ে যায় বিকাল ৫.৩০ থেকে ৬ টার মধ্যে । ভাড়া ডেক ২৫০ টাকা / ৩০০ টাকা । কেবিন ১০০০/১২০০ সিংগেল। পৌছাবেন সকাল ৫ টা থেকে ৫.৩০ এর মধ্যে মনপুরা লঞ্ছ ঘাটে , সেখান থেকে বাইকে সোজা চলে যাবেন হাজিরহাট বাজারে বাইক ভাড়া জনপ্রতি ৪০/৫০ টাকা সময় লাগবে ১৫ মিনিট।
এটি হচ্ছে মনপুরার প্রাণকেন্দ্র। হোটেলে থাকতে চাইলে রয়েছে ৩/৪ টি হোটেল মোটামুটি মানের ভাড়া রুম প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা । এছাড়া রয়েছে সরকারী ডাকবাংলো , থাকতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতী লাগে। এছাড়া তাবু টাংগিয়ে থাকতে চাইলে থাকতে পারেন।
মনপুরায় সড়ক পথে ঘুরতে চাইলে রয়েছে বাইক একমাত্র ভরসা, হাজির হাট বাজার থেকে সাকুচিয়া পর্যন্ত ঘুড়ে আসা যায় , রাস্তা একদম মসৃন কোনো ভাংগা নেই যেতে পথে মেরিন ড্রাইভ এর ফ্লেভার পাবেন একদিকে বন অন্যদিকে সাগর। হাজিরহাট বাজার থেকে সাকুচিয়া আসা যাওয়ায় খরচ পড়বে ৩০০ টাকার মত , ১ ঘন্টায় ঘুরে আসতে পারবেন চাইলে জায়গায় জায়গায় থেমে ছবি তুলতে পারবেন এছাড়া হরিণ ও দেখতে পাবেন।
নদী ও সাগরে ঘুরতে চাইলে ট্রলার ভাড়া করে ঘুড়তে হবে , মনপুরা ভ্রমনে এটি হচ্ছে মূল এডভেঞ্চার তবে বর্তমান আবহাওয়ার জন্য ট্রলারের পরিবর্তে ফিশিং বোট ভাড়া করুন নৌকার মাঝি আপনাকে ৪/৫ ঘন্টা সময় দিবে আপনি চর সামসুদ্দিন চর নজরুল সোনার চর সহ আরো দুই তিনটি চর ঘুরতে পারবেন এসব চরে সুন্দর বনের মত দেখতে লাগে ভিতরে প্রবেশ করে হরিণ দেখতে পাবেন। তবে এই মৌসুমে সাগর ও মেঘনা নদী উত্তাল তাই ভ্রমন এর পুর্বে আবহাওয়া ভালো করে দেখে নিন। ট্রলার ভাড়া করতে আপনার গুনতে হবে ১৫০০ টাকার মত তবে ২০০০ চাইবে ।
যারা ক্যাম্পিং করতে চান>> ক্যাম্পিং করতে চাইলে হাজিরহাট ল্যান্ডিং স্টেশনের আশেপাশে করুন , স্থানীয় কাউকে বললেই হবে ক্যাম্পিং করতে চান তাহলে জায়গা দেখিয়ে দিবে , একদম মেঘনা নদীর কোল ঘেষে করতে পারেন আবহাওয়া ঠিক থাকলে মিল্কিওয়ে দেখতে পাবেন এছাড়া মনে হবে চাঁদ আপনার একদম কাছেই , ক্যাম্প ফায়ার ও ফানুশ উড়িয়ে দারুন কিছু মুহুর্ত উপভোগ করতে পারেন।
যা খেতে পারবেন >> খাবারের জন্য রয়েছে স্থানীয় হোটেল , সাধারণত সামুদ্রিক মাছ ও মুরগী পাওয়া যায় হোটেল গুলোতে । খাবারের দাম কম , ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে প্রতিবেলার খাবার খেতে পারবেন। এছাড়া রয়েছে বিখ্যাত মহিষের কাচা দুধের দই এটি খেতে কখন ও ভুলবেন না।
যা কখনো করবেন না >> মনপুরা অনেক পরিচ্ছন্ন একটি জায়গা এর রাস্তাঘাট মাঠঘাট সম্পুর্ন পরিস্কার তাই চিপস এর প্যাকেট জুস এর বোতল রাস্তায় কিংবা নদীতে ফেলা থেকে বিরত থাকুন। কোনোরকম নেশা জাতীয় দ্রব্য নিয়ে মনপুরায় প্রবেশ থেকে বিরত থাকুন এটি মনপুরায় বড় ধরনের অপরাধ হিসেবে গণ্য। হরিণ এর মাংশের লোভনীয় অফার পেলে তা থেকে দূরে থাকুন আর ভুলে ও এই নিয়ে কোনো কথা বলবেন না কারো সাথে।
মনে রাখা ভালো >> বাইক এ উঠার পুর্বে এর ভাড়া জেনে নিন এবং দরদাম করে নিন আর তা না করলে ঠকে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে । মনপুরা নিরাপদ একটি জনপদ তাই নিরাপত্তা নিয়ে কোনো টেনশন করতে হবেনা, এখানকার মানুষ অনেক অতিথিপরায়ন তাই নির্বিঘ্নে সারা রাত মনপুরায় ঘুড়তে পারেন । মনপুরায় সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ১২,৩০/ ১ টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় তাই
মোবাইল চার্জ ফুল রাখুন। নিচের ছবি গুলো মোবাইল দিয়ে তোলা কোনো ইডিট করা হয়নি । মনপুরার আরো ছবি দেখতে চাইলে এই লিঙ্কে যেতে পারেন https://goo.gl/1KDLFR
৫ জনের গ্রুপ হলে জনপ্রতি ২০০০ টাকায় ২ রাত থাকতে পারবেন ভালো করে।
লেখকঃ জাকারিয়া পারভেজ