তিনাপ সাইতার জলপ্রপাত ও অপরূপ পাইন্দু খাল ভ্রমণ

0
তিনাপ সাইতার জলপ্রপাত
তিনাপ সাইতার জলপ্রপাত

তিনাপ সাইতারকে বলা হয় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত। তবে তিনাপে যাওয়ার পথটি এককথায় অপূর্ব ও আজীবনে ভোলার নয়। আর অপরূপ পাইন্দু খাল।

তিনাপ সাইতার জলপ্রপাত
তিনাপ সাইতার জলপ্রপাত

আমাদের জনপ্রতি খরচ হয়েছিলো মাত্র ২৩০০ টাকা!

যেভাবে যাবেন- প্রথমে ঢাকা থেকে বান্দরবান আসতে হবে। ঢাকা থেকে বান্দরবানের বাস পাবেন অহরহ। আবার চট্রগ্রামে ট্রেনে এসে চট্টগ্রাম থেকে বাসে বান্দরবান আসতে পারেন। যদি বাজেট কম থাকে তবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রাতের চট্টগ্রাম মেইলে ১১৫ টাকায় চলে আসুন।

চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট থেকে বান্দরবানের বাস পাবেন।

বান্দরবান এসে বাস স্ট্যান্ড থেকে দশ টাকার টমটম ভাড়ায় চলে আসবেন রোয়াংছড়ি বাস স্ট্যান্ডে। এখান থেকে রোয়াংছড়ির ভাড়া ৬০ টাকা। সময় লাগবে দেড় ঘন্টা।
তিনাপ সাইতার জলপ্রপাত ও অপরূপ পাইন্দু খাল
পাহাড়ী পথ আর পাহাড় ছোঁয়া মেঘ দেখতে দেখতে চলে আসবেন রোয়াংছড়ি। এবার ফ্রেশ হয়ে গাইডের খোঁজ নিন। গাইড জোগাড় হলে খাওয়ার রেশন কিনে নিন। রামাধন নামে একটা হোটেল আছে। চাইলে জিরিয়ে নিতে পারেন এখানে।

এবার এখান থেকে যেতে হবে রনিনপাড়া! দল বড় হলে চাঁদের গাড়িতে চলে যান, নয়তো হাঁটতে থাকুন। হাঁটতে চাইলে চলুন পাহাড়ী ছড়া ধরতে হবে। হাঁটার মজাই আলাদা। একদিকে পাহাড়, পাশে ঝিরিপথ, অপূর্ব অনিন্দ্য পথ! ক্লান্ত হলে বিশ্রাম নিয়ে আবার চলুন! সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা লাগবে রনিনপাড়া পৌঁছাতে। রনিনপাড়া পৌঁছে এবার জিরিয়ে নিন। জানি এতোক্ষণ পথচলার হাঁপিয়ে গেছেন। চাইলে গাইডকে বলে গোসলের ব্যবস্থা করে নিন। এখানের অধিবাসীদের প্রায় সবাই বম ও তঞ্চংগ্যাও জাতির। কাল যেহেতু যাবেন সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে রিপোর্ট করতে হবে। আড্ডা দিতে পারেন বমদের সাথে। বেশ ভালো লাগবে। রাতে খেয়ে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ুন কারন আগামীকাল বেশ সকালে উঠতে হবে। হাঁটতে হবে ১৩ কিলোমিটার। অর্থাৎ রনিনপাড়া থেকে তিনাপ সাইতারের দুরত্ব ১৩ কিলোমিটার। সময় লাগে চার থেকে সাড়ে চার ঘন্টা।
তিনাপ সাইতার জলপ্রপাত ও অপরূপ পাইন্দু খাল
হাঁটতে হাঁটতে
দেড় ঘন্টা পর পৌঁছাবেন দেবছড়াপাড়ায়। এখানে একটু জিরিয়ে নিন। সূর্য ও তখন উঠে গেছে। দেবছড়াপাড়া থেকে এবার ঝিরিপথ। পথের দৃশ্য অপূর্ব ও মোহনীয়। পাহাড়ের ঢাল, ঝিরিপথ, বনের পাশ দিয়ে হেঁটে চলা। সাবধানে হাঁটতে হবে। বেশ পিচ্ছিল পাথর। পাহাড় ও বাইরে হবে কিছুটা। কিছুক্ষণ হাঁটার পর পাবেন পাইন্দু খাল। পাইন্দু খাল দিয়ে যেতে পারেন, আবার চাইলে পাহাড় হতেও যেতে পারেন। পাহাড়ী রাস্তার চেয়ে খাল দিয়ে যাওয়া সুন্দর অধিক তবে বিপজ্জনক। চোখ খোলা রেখে চলতে হবে। পানির স্রোত ও বেশ। বেশ পিচ্ছিল ও। কিছুক্ষণ হাঁটলে পেয়ে যাবেন কাঙ্খিত তিনাপ! কানে আসবে তিনাপের জলের শব্দ। এখানে বিশাল সব পাথর।
একপাশে এসে শরীর ভিজিয়ে নিন। তারপর পাথরের উপর বসে পড়ে দেখতে থাকুন জলপতনের শব্দ! জানি মুহুর্তেই ঘুচবে যাবে সমস্তই ক্লান্তি।

বিঃ দ্রঃ –প্রকৃতি আমাদের সম্পদ। দয়া করে প্রকৃতিতে যত্রতত্র ময়লা ফেলবেন না। আপনি যেমন সৌন্দর্য উপভোগ করছেন, আপনার পরবর্তী প্রজন্ম যেন অধিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।

লেখকঃ আহমাদ ইশতিয়াক