জিপিএস নষ্ট করে গাড়ি ছিনতাই, তিন বছরে কোটিপতি

0

যেকোনো গাড়ির লক ভেঙে বা বিকল্প চাবি দিয়ে খুব দ্রুত গাড়ি চালু করে চুরি করত একটি চক্র। এরপর গাড়ি শনাক্তের জিপিএস ট্র্যাকিং ডিভাইস বন্ধ করে চলে যেত গাড়ি নিয়ে। এভাবেই চক্রটির তিন বছরে আয় প্রায় কোটি টাকা। তবে হলোনা শেষ রক্ষা। মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম এলাকা থেকে ধরা পড়ে এ চক্র। চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি জব্দ করা হয় চারটি পিকআপ।

বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মেল হক।

র‌্যাব জানায়, কারাগারে থাকা অবস্থায় সংঘবদ্ধ চক্রটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছিল তারা। চক্রের মূলহোতা মোহাম্মদ সাগর। এই ঘটনায় সাগরসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- মোহাম্মদ সোহেল, সাকিব হোসেন, মোহাম্মদ হাসান ও কামরুজ্জামান। সংঘবদ্ধ চক্রটি পরস্পরের যোগসাজশে গত তিন বছর ধরে রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিনি পিকআপ গাড়ি চুরি করে আসছে। আটক সোহেল ও সাগর ঢাকার একটি হাইস্কুল ও নারায়ণগঞ্জের একটি কলেজে পড়াশোনা করতেন। তারা সম্পর্কে আপন ভাই। তারা উভয়েই মাদকাসক্ত। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে ও মাদকের টাকা জোগাড় করতেই গাড়ি চুরি শুরু করেন তারা।

র‌্যাব আরো জানায়, মুহূর্তেই যেকোনো গাড়ির লক ভাঙা বা বিকল্প চাবি দিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিতে সক্ষম চক্রটি। এমনকি গাড়ি শনাক্তের জিপিএস ট্যাকিং ডিভাইসও বিকল করে দিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান তারা। এরপর গাড়ির মালিককে ফোন করে অর্থ আদায় কিংবা গাড়ি বিক্রি করে দেয় চক্রটি।

জানা যায়, গত তিন বছর ধরে এই চক্রটি গাড়ি চুরির সঙ্গে জড়িত। এই পর্যন্ত এই চক্রটি শতাধিক গাড়ি চুরি করেছে। সোহেল একজন গাড়ি চালক। বর্তমানে অনেক গাড়িতে জিপিআর সিস্টেম থাকে, কিন্তু সোহেল মুহূর্তের মধ্যে সেই জিপিআর সিস্টেম অকেজো করে ফেলতো। তারা সাধারণত পিকআপ চুরি করত। কারণ পিকআপে সাধারণত দুজনের বেশি থাকে না, আবার অনেক ক্ষেত্রে শুধু চালক থাকে।

মোজাম্মেল হক বলেন, চোরাই গাড়ির মালিককে ফোন দিয়ে গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা আদায় করতো। এর বাইরে চোরাই গাড়ির রং পরিবর্তন করে ভুয়া নাম্বার প্লেট লাগিয়ে কমদামে বিক্রি করে দিত। এই দুই প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হলে গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করে দিতো।