নবজাতকের মৃত্যুতে হাসপাতালে সিল-গালা

0
নবজাতকের মৃত্যুতে হাসপাতালে সিল-গালা

কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দিতে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু ও অনুমোদনপত্রে দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বেসরকারি একটি হাসপাতলকে সিলগালা করেছে প্রশাসন।

মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার গৌরীপুরে খিদমা ডিজিটাল নামে ওই হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করার আদেশ দেন।

তিনি গণমধ্যমকে জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা তাছলিমা আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধূ খিদমা হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে যান। পরীক্ষা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে জানান যে তিনি নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এসময় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ২ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের পরামর্শ দেন তারা। অতঃপর ৪ সেপ্টেম্বর ওই হাসপাতালে ভর্তি হন তাছলিমা। সন্ধ্যার পর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু নবজাতকের প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাছলিমা ও নবজাতককে ঢাকার মাতুয়াইল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান নবজাতকটি অনেক আগেই মারা গেছে। পরে রবিবার বিকেলে তাছলিমা আক্তারকে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

তিনি আরও জানান, ‘বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতালটি পরিদর্শনে যান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম। তিনি আমাকে হাসপাতালটির অনুমোদনপত্রে অনিয়ম, ওটি রুমের বেহাল অবস্থা, আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন বিকল, প্রশিক্ষিত ডাক্তার, নার্স ও ল্যাব টেকনেশিয়ান না থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়মের কথা জানান। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। এ সময় হাসপাতালটিতে ভর্তি থাকা তিনজন রোগীকে পাশের একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর গৃহবধূর স্বামী জামাল হোসেন বাদী হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মঙ্গলবার কুমিল্লার আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন হাসপাতালের মালিক দেওয়ান মো. সাইফুল ইসলাম।

এ বিষয়ে জানতে খিদমা ডিজিটাল হাসপাতালের মালিক দেওয়ান মো. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় উপস্থিত ছিলেন দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, দোনারচর ২০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সিনথিয়া তাছমিনসহ আরও অনেকে।