বরফ গলা নদী : পাঠ প্রতিক্রিয়া

0
বরফ গলা নদী
বরফ গলা নদী - জহির রায়হান

প্রথমেই দু’টি কথা বলে নিতে চাই – জহির রায়হান আমার প্রিয় লেখকদের মধ্যে অন্যতম। তার কারণ, তাঁর লেখাগুলি বাস্তবধর্মী এবং জীবনঘেঁষা। আমার ব্যক্তিগত প্রেফারেন্সে বলছি – অবাস্তব ফ্যান্টাসি ধরণের কাহিনী আমার সাথে যায় না। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত, প্রতিকূলতা এবং তার মধ্যেই মানুষের সংগ্রাম, বেঁচে থাকা – এধরণের থিম আমাকে খুবই টানে। যেটা জহির রায়হানের বইতে পাই।

বরফ গলা নদী
বরফ গলা নদী
– জহির রায়হান

“বরফগলা নদী” হতাশ করে নি। একটুও নয়। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে মরিয়ম। তার টিউশনির টাকা এবং বড়ভাই মাহমুদের কষ্টের চাকরিতে টানাটানির বড় সংসার। বাবা-মা এবং ছোট ভাই-বোনগুলি। এই পরিবারে ঘটনাচক্রে আবির্ভাব ঘটে মনসুর নামক ছেলেটির, যে মরিয়মকে ভালোবাসে। মরিয়মও গোপনে তার প্রতি দুর্বলতা পোষণ করে। কিন্তু “বড়লোকের টাকা উড়ানো ছেলে” ধরে নিয়েই মাহমুদ তাকে পছন্দ করে না। এদিকে মরিয়মের কলেজের বান্ধবী লিলি তাদের বাসায় বেড়াতে আসায় তার সাথে পরিচয় হয় মাহমুদের। পরবর্তীতে কি ঘটে? মরিয়ম-মনসুরের এই ভালোবাসাই বা কোনদিকে মোড় নেয়?

পরের ঘটনাগুলো নিত্যদিন আমাদের চারপাশে যা ঘটে চলেছে ঠিক তারই একটা ছোট্ট চিত্র। জহির রায়হানের বই পড়লে আমার কেবল মুখ থেকে বেরিয়ে আসে, “এমনই হয়। বাস্তবতাটাও এমনই হয়। তবুও জীবন চলেই!”

ছোট বই, একটানেই শেষ হবার কথা। ভালো লেগেছে সবসময়কার মতো বাস্তব জীবনের প্রতিফলন দেখতে পেয়ে। জীবনে উত্থান-পতন আসে। মানুষ যা ভাবে তাও হয় না। কিন্তু তারপরেও কিছুই থেমে থাকে না।

বইয়ের শেষ লাইনটা মিলিয়ে নিয়েই বলি, “যে শক্তি জীবনকে চালিয়ে নিয়ে চলেছে তার কি কোনো শেষ আছে লিলি?”

পাঠ প্রতিক্রিয়াটি লিখেছেনঃ উম্মে শারিকা‎

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে