পাক সার জমিন সাদ বাদ : পাঠ প্রতিক্রিয়া

0
পাক সার জমিন সাদ বাদ

বইঃ পাক সার জমিন সাদ বাদ।
লেখকঃ হুমায়ুন আজাদ।
প্রকাশনাঃ আগামী প্রকাশনা ( দ্বাদশ মুদ্রন মার্চ ২০১০)।
মূল্যঃ ১৫০ টাকা।
পৃষ্ঠাঃ ১১২।
#উৎসর্গঃ১৯৭১
পাক সার জমিন সাদ বাদ
লেখক প্রসঙ্গেঃ হুমায়ুন আজাদকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই, বাংলাদেশের প্রধান প্রথাবিরোধী, সত্যনিষ্ঠ, বহুমাত্রিক লেখক।

আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম? পড়ার পর পাক সার জমিন সাদ বাদ পড়লে মনে হবে দেশের প্রতিটি রাজনীতিক পরিবর্তন একজন সাহিত্যিকের উপর কতোটা প্রভাব ফেলতে পারে, আর তা যদি হুমায়ুন আজাদের মতো চাছাছোলা লেখক হয় তাহলে সচেতন পাঠক ক্ষতবিক্ষত হতে বাধ্য।

১৪ ডিসেম্বরে এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে যদি আমরা এতো বুদ্ধিজীবী না হারাতাম হয়তো আরো অনেক শক্তিশালী প্রতেবাদী লেখক আমাদের মধ্যে থাকতো।

বই প্রসঙ্গেঃ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ শুধুমাত্র ভুখণ্ডে নাম পরিবর্তন নয় এর মাঝে আরো অনেক বেশিকিছু ছিলো যা ৪৭ এ ধর্মভিত্তিক দেশবিভাগের অসারতাকে প্রমান করে।

কিন্তু ৭৫ পরবর্তী ক্ষমতায় পট পরিবর্তন সেই সোনার বাংলাকে প্রতিক্রিয়াশীল অন্ধকারের শক্তিরাশি আরেক অপপাকিস্তান বা বাংলাস্তানের দিকে টানতে থাকে।

ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান মাড়িয়ে রাজনীতিতে ধর্মেভিত্তিক দলের প্রতিস্থাপনের ফলে উগ্র জঙ্গি বাদ সহ আরো অনেক বেপরোয়া ধর্মীয় রাজনীতিকে নগ্ন চপ্টাঘাত বলা যায় এই বইকে।

শুধু তাই নয় আমলাদের কুটচাল এবং সাধারন জনগনের মেরুদন্ড হীনতাও প্রকাশ্য।
একসময় দেশে উগ্রপন্থী সমাজতন্ত্রের কিছু দল ছিলো তারাও যে দেশের জন্যে কিছু করতে পারে নি শুধু সহিংসতা ছাড়া এটাও স্পষ্ট।
স্বাধীনতা বিরোধীদের পুন প্রবেশ, উগ্রমৌলবাদ এবং জঙ্গিবাদের ফলাফল বা কল্পচিত্র স্পষ্ট হবে এই বইয়ের মাধ্যমে।

ব্যাক্তিগত প্রতিক্রিয়াঃ প্রথম কথা দূর্বল চিত্তের এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক পাঠকের জন্যে এই বই নয়, কারন বইয়ের ভাষা অনেক বেশি আক্রমনাত্বক।

যদিও সরাসরি আক্রমণ কোনো দলের প্রতি মনে হতে পারে কিন্তু ভালোকরে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে কিছু নিদ্দিষ্ট বিষয় লেখক নগ্নতর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। সেখানে উগ্রতাকে উগ্রতা দিয়ে প্রতিহত কারা প্রতিবাদের ভাষা ছিলো। তীব্র স্বদেশপ্রেমী একজন লেখকের কাছথেকেই এমন লিখা আশা করা যেতে পারে, বাংলাদেশ নিয়ে যার আমৃত্যু স্বপ্ন ছিলো।

তার উপর চাপাতির আঘাত প্রমান করে উনি উগ্রপন্থীদের অস্তিত্ব ঠিকই অনুভব করতে পেরেছিলেন এবং একটি সোনার বাংলা নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে মধ্যযুগে হাটছে।

পাঠ প্রতিক্রিয়াটি লিখেছেনঃ Chowdhury Samirul Kader Sajan

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে