এই যুগে অনেক সময় সুন্দর করে কথা বলতে না পারার কারনে জীবনে অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে পরতে হয়। দৈনন্দিন জীবন হতে শুরু করে যেকোন প্রতিষ্ঠানে নিজের মনের ভাব অন্যের নিকট পৌঁছানোর এক বিশেষ মাধ্যম। সুন্দর করে কথার এই কাজটা কিন্তু কঠিন না। শুধু প্রয়োজন নিয়মিত চর্চা ও কিছু দিক নির্দেশনার অনুশীলন। জীবনের নতুন মোড় নিতে সুন্দর করে কথা বলার অভ্যাস হোক এখন থেকেই এই লেখা পড়ে।
একজন ভালো শ্রোতা হোন
আপনাকে প্রথমে একজন শ্রোতা হতে হবে কারন আপনি ঠিক তখনই ভালো বলতে পারবেন যখন আপনি বক্তার বক্তব্য বা কথাটি মনোযোগ দিয়ে শুনবেন। ভালো বলতে পারার জন্য এই বিশেষ গুণ থাকা বাঞ্ছনীয়। আপনি তাই শ্রোতার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবেন এবং অন্যন্যরা কিভাবে কথা বলে সে যদি ভালো বলতে পারে তাহলে তাকে লক্ষ করবেন। চিন্তা করবেন কি বলছে এবং ধৈর্যের সাথে মনোযোগ দিয়ে সব কথা শুনুন।
লক্ষ্য রাখুন
আপনার আলোচনার বিষয়বস্তুটির দিকে লক্ষ রাখুন। আপনার উদ্দেশ্যে যে বক্তব্য দিচ্ছেন তার দিকে লক্ষ করুন বক্তব্যের বিষয়টিকে মনোযোগ সহকারে বুঝার চেষ্টা করুন। চিন্তা করুন বক্তব্যের মূল বিষয়টি কি এবং আপনি এর প্রেক্ষিতে কি ধরনের বক্তব্য বা আলোচনা করতে পারেন। আলোচনার মূল বিষয়টি বুঝতে পারলে আপনি আপনার আলোচনার বিষয়টিও সহজেই বলতে পারবেন ।
“ইগো”কে ফেলে দিন
ইগো বা অহং মানুষের অনেক ভালোগুণের মৃত্যু ঘটায়। কারন আপনার এই ইগো বা অহং ধীরে ধীরে আপনাকে মাকড়শার জালের মত আবৃত করে ফেলে সেখান থেকে বের হওয়া অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পরে। ইগো সহজেই যেকোন বিষয় যেকারোর সাথে মিশতে দেয় না যার আপনাকে অন্যান্যদের থেকে অনেকটা আলাদা করে ফেলে। এইরূপ অহং বা ইগো থাকলে আপনি কখনোই একজন ভালো বক্তা হয়ে উঠতে পারবেন না। তাই নিজের অহং বা ইগো পরিহার করতে হবে।
অঙ্গভঙ্গি ঠিক রাখুন
কথা বলার সময় আপনার অঙ্গভঙ্গি অনেক কিছু প্রকাশ করে থাকে। কথা বলতে না পারা ব্যক্তিরাও অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তাদের মনের ভাব প্রকাশ করতে থাকে। তাই নিজের অঙ্গভঙ্গির দিকে লক্ষ রাখুন। আপনি যা বলতে চাচ্ছেন তা যদি অঙ্গভঙ্গি অন্যরকমভাবে প্রকাশ করে তখন ব্যাপারটি ঠিক উল্টো হয়ে যাবে। তাই কথা বলার সময় নিজের অঙ্গভঙ্গির প্রয়োগে সতর্কতা অবলম্বন করুন।
উচ্চারণ করুন শুদ্ধ
যেই ভাষাটি সকলের কাছে খুব সহজেই বোধগম্য হয় সেই ভাষায় কথা বলাই বুদ্ধিমানের কাজ। শুদ্ধ, ও সাবলীল ভাষার চর্চা বা ব্যবহার করা। সঠিক বাংলা উচ্চারণ করা এবং বাংলা শিখতে বিভিন্ন কোর্স করতে পারেন। যেখানে সহজেই বাংলা শুদ্ধ উচ্চারণসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর খুঁটি নাটি অনেক তথ্য নিজের আয়ত্ত করতে পারবেন।
খেয়াল রাখুন পরিবেশে
আপনার আলোচনার পরিবেশ সম্পর্কে ধারনা রাখুন। আশেপাশে পরিবেশের উপর নির্ভর করেই কথা বলতে হয়। আপনার আলোচনায় বিভিন্ন পরিবেশ নির্ভর করে কখনো হাসির পরিবেশ থাকে, কখনো কষ্টের আবার কখনো গম্ভীর। এরূপ নানা পরিবেশে আমাদের চলতে হয় তাই পরিবেশের উপর লক্ষ্য রাখুন। পরিবেশ বুঝে কথা বলুন।
কথায় ফাঁক রাখুন খানিকটা
কথা বলার আগে সময় বা গ্যাপ নিয়ে কথা বলুন। তাহলে আপনার বক্তব্য বা আলোচিত বিষয়বস্তুকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের সময় পাবেন। আপনি যদি বই পড়া বা রচনার মত করে কথা বলেন তাহলে সেটি শুনতে শ্রোতার একঘেয়েযেটি আপনাকে মি লাগবে। তাই কথার মাঝে সময় বা গ্যাপের প্রয়োজন আছে। তাই সময় নিয়ে কথা বলুন।
নিজের উপর আত্মবিশ্বাস রাখুন
কথা বলার জন্য নিজের আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি জরুরী। কেননা অনেক সময় দেখতে পাবেন অনেকেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে যেয়ে হিমসিম খায়, ব্যপারটা নিজের আত্মবিশ্বাসের। শুধু মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্যই নয় সাধারন জীবনে কথোপকথনে নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে নিজের আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজন। তাই আত্মবিশ্বাসী হোন।