উপন্যাস: সেদিন চৈত্রমাস
লেখক: হুমায়ন আহমেদ
পেজ: ১২০
রেটিং: ৪/৫
প্রধান চরিত্রসমূহ:★মবিনুর রহমান★লায়লা ★আতর/নীতু★শফিক★মীরা★জয়নাল
★মুন্সি ইদ্রিস।
প্লট:মবিনুর রহমান একজন ধনাঢ্য শিল্পপতি। যিনি এতিমখানায় বড় হয়েছেন। এই মুরুব্বি ব্যাক্তিটি ন্যায়-নীতির এক অসাধারণ আদর্শ। আর এই শিক্ষাটা তিনি এতিমখানার পরিচালক #মুন্সি ইদ্রিসের কাছ থেকেই পেয়েছিলেন। তবে এতো ধনসম্পত্তি থাকা স্বত্তেও মবিনুর সাহেবের কোন সংসার জীবন নেই। কেন? আর এটাই এ উপন্যাসের প্রধান প্লট বানিয়েছেন লেখক।
শফিক অভাবী মানুষ। মবিনুর রহমানের পিএ হিসেবে চাকুরী পান। ফলে আর্থিক সচ্ছলতা আসে তার সংসারে। বউ #মিরা আর মেয়ে নিশো কে নিয়ে তার ছোট সংসার। মিরা ও শফিকের রোমান্স ও ফুটিয়ে তুলতে ভূলেননি লেখক। যেমন -“প্রতি রাতেই বিশেষ কাজের জন্য আমি সাজতে পারবো না-মিরা” তবে পাঠক এটাকে #লুতুপুতু ভাবলে ভূল হবে।
শফিকের বৃদ্ধ বাবা #জয়নুল ছিলেন স্কুল মাষ্টার।ইংরেজি ডিকশনারি A-Z মুখস্থ তার। এই কারনেই তিনি ডিকশনারি জয়নাল হিসেবে পরিচিত।
এ উপন্যাসের ক্লাইম্যাক্সে পৌছিয়ে দিতে হুমায়ন সাহেব পাঠককে একটু ব্যাক স্টোরিতে নিয়ে গেছেন বন্ধুর বোন লায়লার সাথে মবিনুর রহমানের বিয়ে হয় তবে এটা একধরনের দুর্ঘটনা ছিলো। ৬/৭ ঘন্টার ভিতর ডিভোর্সও হয়ে যায়। এই অল্পসময়ের ভিতর মবিন সাহেব লায়লাকে প্রচন্ড ভালবেসেছিলেন এবং তাদের ভিতর অন্তরঙ্গতাও হয়েছিলো।আসলে বরপক্ষ ভূল করে অন্য ষ্টেশনে( ট্রেন) নেমে পড়েছিল ফলে সামাজিকতা রক্ষার জন্য মবিন সাহেবের কাধেই পড়ে লায়লা। পরে বরপক্ষ পৌছালে ডিভোর্স হয়ে নতুন বরের সাথে বিয়ে হয়।
অনেকদিন তাদের কোন যোগাযোগ ছিল না লায়লার সংসারে যখন একমাত্র মেয়ে নিতু জন্মগ্রহণ করে সেদিনই প্রথম লায়লা তার প্রথম স্বামী মবিনকে ফোন করে খবরটা জানায়। মবিন সাহেব মেয়ের নাম দিয়েছিলেন আতর। তবে লায়লার কাছে এ নামটা খুবই বিশ্রী মনে হয়। তাই নিজেই নাম রাখেন নীতু। লায়লা জানতো এ সন্তান মবিন সাহেবরই এবং মবিন সাহেবও এটাই বিশ্বাস করেন। এইকারনেই হুমায়ন আহমেদ বাড়ির নাম -আতর-বাড়ি দিয়েই উপন্যাস টা শুরুকরেন।
সময়ের পরিক্রমায় লায়লা বিধবা হয়ে যান। শিক্ষকতা করে জীবিকানির্বাহ করেন। এদিকে নীতু/আতর বড় হয়েগেছে। বিয়েপযুক্ত বয়স তার হয়েছে।মবিন সাহেব মাঝে মাঝেই লায়লা ও নীতুর খোঁজ-খবর নেন শফিকের মাধ্যমে।প্রতিরবছর হিমসাগর আমও পাঠায় লায়লার বাসায়।
একদিনের জন্য হলেও লায়লা তার স্ত্রী ছিল। এবং সেই পবিত্র সম্পর্কের ফসল মেয়ে আতর।জন্মদাতা বাবা হয়েও সেই অধিকারটা সমাজের কাছে সে চাইতে পারে না এমনকি লায়লাকেও এই অধিকারের কথাটা প্রকাশ করতে পারে না মবিনুর সাহেব।তবে এ সত্যকে যেমন কল্পলোকে ভাবতে যেমন তিনি সুখ পান তেমনি দুঃখের আগুনেও পুড়ে পুড়ে ছাই হয়ে জীবনে কোন আর ২য় বিয়ে করেননি।লেখক এভাবেই সমাপ্তি টেনে দিয়েছেন। কাহিনী এতোদূর পর্যন্ত গড়ানোই যথেষ্ট ছিল।
সবশেষে আপনার মনে হবে উপন্যাসটির নামকরন সেদিন চৈত্রমাস না হয়ে যদি’ আতর’ হতো তাহলে নামকনের স্বার্থকতা থাকতো। যারা পড়েছেন কিংবা পড়বেন এমন টাই মনে হবে আপনাদের।সবশেষে এটুকুই বলবো যে পাঠক এই১২০পেজের ‘সেদিন চৈত্রমাস’ পড়লে সময়টা তার অপচয় হবে না।সব মিলিয়ে লেখক বইপোকাদের তৃষ্ণা পূরন করতে পারবে(গ্যারান্টেড)।
পাঠ প্রতিক্রিয়াটি লিখেছেনঃ Tanzir Hashmi