ক্লিওপেট্রা : পাঠ প্রতিক্রিয়া

0
ক্লিওপেট্রা

বই:#ক্লিওপেট্রা।
লেখক:হেনরী রাইডার হ্যাগার্ড।
রুপান্তর:সায়েম সোলায়মান।
প্রচ্ছদ :রনবীর অাহমেদ বিপ্লব।
প্রথম প্রকাশকাল:২০০৫।
প্রকাশনী:সেবা।
ক্লিওপেট্রা

কাহিনী: মিশরের একটি প্রাচীন শহরের নাম অ্যাবাউদিস।পর্বত মালা দিয়ে ঘেরা শহরটির একপ্রান্তে অনেক প্রাচীন এক মন্দিরের ধংব্বসাবশেষের দেয়াল ঘেষে এক অনাবিস্কৃত কবর বহু বছর ধরে নিজের ভেতরে লুকিয়ে থাকা রহস্য নিয়ে পড়ে ছিল। গুপ্তধনের লোভে চোরের দল সেই কবরের ঠিক উননব্বই ফিট নীচে একটা বড় প্রকোষ্ঠে তিনটা কফিনের দুটোই চুরি করে ফেলল। পড়ে রইল তিন নম্বর কফিনটা বছরের পর বছর। লেখকের এক এ্যাডভেন্চারপ্রিয় বন্ধু তস্কর বাহিনীর সর্দারের সাথে যোগাযোগ করলেন। নিয়ে যাওয়া হল তাকে সেই অভিশপ্ত কবরখানায়। তিন নম্বর কফিনে পাওয়া গেল একটা প্যাপিরাস।সেই প্যাপিরাস হাতে নিয়ে লেখকের বন্ধু ছুটে এলেন লন্ডনে তার অারেক হায়রোগ্লিফিক বিশেষজ্ঞ বন্ধুর কাছে। অাবিস্কৃত হল রানী ক্লিওপেট্রার অামলের ভাগ্যহত এক যুবকের অাত্নজীবনী। যার নাম ছিল হারমাচিস। মৃত্যু কালে হারমাচিসের মা স্বপ্ন দেখেছিল, একদিন হারমাচিসই হবে মিশরের রক্ষাকর্তা। অ্যাবাউদিসের প্রধান পুরোহিত হারমাচিসের বাবা পুত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়লেন। শীঘ্রই এই স্বপ্নের খবর ছড়িয়ে পড়ল মিশরের চারিদিকে। রাজা টলেমি হারমাচিসকে মেরে ফেলার জন্য লোক পাঠালেন। কিন্তু দাসী অাটোয়ার উপস্থিত বুদ্ধিতে বেঁচে গেল ছোট্ট হারমাচিস। ধীরে ধীরে বড় হতে লাগল হারমাচিস। সে ছিল যেমন শক্তি শালী তেমনি বুদ্ধি মান।সৌন্দর্যের দিক থেকে ও হারমাচিস ছিল সেরাদের সেরা। পুত্রের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করে হারমাচিসের বাবা ছেলেকে উপযুক্ত শিক্ষা ও সাধনা গ্রহন করার জন্য পাঠালেন মেমফিসে। হারমাচিসও জানতে পারল অত্যাচারী রানী ক্লিওপেট্রা কে গদিচ্যুত করে মিশরে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই হল তার একমাত্র লক্ষ্য। অ্যাবাঊদিস মন্দিরের প্রধান পুরোহিত হিসেবে তার অভিষেক অনুষ্ঠান পালন করা হল।দেবতাদের নামে শপথনামা পাঠ করে তাকে মিশরের বর্তমান ফারাও হিসেবে ঘোষনা করা হল। অালেকজান্দ্রিয়ায় চলে এল হারমাচিস তার লক্ষ্য পূরনের ঊদ্দেশ্যে। ক্লিওপেট্রার দাসী চারমিওন গোপনে তার সাথে হাত মেলাল। একদিন রানীর সাথে অকস্মাৎ দেখা হয়ে গেল হারমাচিসের। নারী সাহচর্য বর্জিত হারমাচিসের মনোজগতে বড়সড় একটা তোলপাড় ঘটে গেল। রুপের অাগুনের সামনে মস্তক অবনত হয়ে গেল শুভ শক্তির। তবুও বিবেকের তাড়নায় ছদ্ম বেশ ধারন করে পৌঁছে গেল হারমাচিস রানী ক্লিওপেট্রার প্রাসাদে।এদিকে চারমিওন হারমাচিসকে মনে মনে ভাল বেসে ফেলেছে। রানীর হারমাচিসের প্রতি দূর্বলতাকে সে কোনভাবে মেনে নিতে পারল না। এক রাতে হারমাচিসের হাতে রানীকে খুন করার সুযোগ চলে এল। কিন্তু নিয়তি যেন বিপরীত কিছুই লিখেছিল।

প্রতিক্রিয়া: এই বই পুরোপুরিভাবে হতাশাগ্রস্থ পুরুষের অাত্নজীবনী। বইয়ের শুরুতেই পাঠক বুঝে ফেলে হারমাচিসের ভাগ্যে কি ঘটতে চলেছে? শুরু থেকেই ঘটনা জেনে ফেলেছিলাম বলেই কি ক্লিওপেট্রা ভাল লাগেনি নাকি এক তুচ্ছ অহংকারী নারীর হাতে সাধক পুরুষের অবমাননা দেখতে ভাল লাগেনি বলেই ক্লিওপেট্রা ভাল লাগেনি এই দুয়ের প্রশ্নে দ্বন্দ্বে দুলতে দুলতে মনে হল হয়ত পুরুষের অবমাননাই মেনে নিতে পারিনি। অাবার প্রধান চরিত্রের নৈতিকতাবোধের চরম স্খলনে কিছুটা রেগে ও গিয়েছিলাম বিরক্তও হয়েছিলাম।তবুও লক্ষ্যভ্রষ্ট হতে না চাইলে শিক্ষনীয় বই হয়ে থাকবে ক্লিওপেট্রা পাঠকের কাছে। অার বিশেষ কিছু বলার নেই।

পাঠ প্রতিক্রিয়াটি লিখেছেনঃ Tabbassum Mou‎

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে