বই: The Alchemist
লেখক: Paolo Coelho
পৃষ্ঠাসংখ্যা: ১৭৭
প্রকাশনী: HarperCollins Publishers India
মুদ্রিত মুল্য: ১৭৫ রুপি
ছেলেটির নাম সান্তিয়াগো। গোধুলীর ম্রিয়মান আলোয় চারপাশ যখন নিভুনিভু তখন সে তার মেষপাল নিয়ে এক নির্জন, ভগ্ন, পরিত্যাক্ত গীর্জার সামনে পৌছুলো। গীর্জার ছাগল বহু আগেই ধ্বসে পরেছে, এক কোনায় অযত্নে বেড়ে উঠেছি বিশাল বড় এক ডুমুর গাছ। এখানেই সে আজ রাত কাটাবে। আর তখনই তার মনে পড়বে তার জীবনের কথা। আন্দালুসিয়ার অন্যান্য বাসিন্দাদের মত অবশ্যই না সে। তারা সবাই নিজের স্বপ্নের কথা বুকে চেপে রাখে। কিন্তু ওটুকুর পিছে দৌড়াবার মত ইচ্ছেশক্তি বা সাহস বুকে রাখতে পারেনা। তারা বাবা চেয়েছিলেন সে পাদ্রী হোক, কিন্তু তার ইচ্ছে ছিলো জগতকে জানার। তার বাবা দ্বিমত করেননি। বরং সাহায্য করেন। আজ এই মেষদের নিয়ে সে ঘুরে বেড়ায়। তার সমস্যা হয়না। সে অনেক কিছু জানতে পারে। হুট করেই একদিন এক উল ক্রেতার মেয়েকে দেখে সে প্রেমে পড়ে। এই প্রেম মানুষকে একটা স্থানে আটকে রাখতেই চায়। কিন্তু সে ত পথিক! যাহোক, সে স্বপ্নে জানতে পারে যে পিরামিডের কাছে সে গুপ্তধন খুজে পাবে। কিন্তু এই স্বপ্নের মানে কি? এক জিপসী বুড়ির কাছে স্বপ্নের তালিম জিজ্ঞেস করলে বুড়ি বলে যে আসলেই সে গুপ্তধন খুজে পাবে। ছেলেটি বিশ্বাস না করলেও এক বুড়োর সাথে দেখা হয়। বুড়ো আবার সালেম রাজ্যের রাজা। সেই তাকে বুঝিয়ে দেয়, তাকে নিজ নিয়তির দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আর কিছু কিছু ইঙ্গিত তাকে ভালো-মন্দ বিচার করতে দিবে। সে আফ্রিকার পথে রওয়ানা হয়, সেখানেই নিয়তি তার সাথে এক এলকেমিস্টের সাক্ষাৎ নির্ধারন করে রেখেছে। সে তার গুপ্তধন কি খুজে পাবে? কিভাবে?
“দ্যা এলকেমিস্ট” বইটার কথা এতবার শুনেছি তবুও পড়ার কথা মাথায় আসেনি। এই স্রোতে আমি অনেক পরে গা ভাসিয়েছি। অনুবাদ এই বইটির যতকগুলোই হয়েছে। জঘন্য লেগেছে। বইয়ের ভাষাটুকু যতই সহজ হোক, এর ভাবগাম্ভীর্য যথেষ্ট কঠিন। ভাষা সহজ হলেই তার অনুবাদ সরল করে করতে হবে তা কিন্তু না। বিশেষত এই বইটির অনুবাদে শব্দচয়ন খুবই সতর্কভাবে করতে হবে। এবার আসি মূল কথায়, অনুবাদ নিয়ে কথা বাদ।
যারা যারা সল বেলোর “হেন্ডারসন দা রেইন কিং” পড়েন নি তারা বইটি পড়ে দেখবেন। বইটির অনুবাদ করেছেন সৈয়দ শামসুল হক, “শ্রাবন রাজা” নামে। অন্বেষা প্রকাশনীর। কেন এই বইটির নাম করলাম? কারন “এলকেমিস্ট” বইয়ে লেখক যে দর্শনের অবতারনা করেছেন তা খুবই চমৎকার এবং “হেন্ডারসন দা রেইন কিং” এর সমগোত্রীয়।
বইটিতে একজন মানুষের স্বপ্ন, ভালোবাসা, ঈশ্বরচেতনা, আত্না, নেয়া পথ, বিশ্বাস, প্রেম ইত্যাদির খুব সহজ নির্ভরযোগ্য কথা তুলে ধরেছেন। আর ফিলোজফার স্টোনের কথাটা চমৎকৃত করেছে। প্রথমত, আমি “ফুলমেটাল এলকেমিস্ট” এনিমেতে ফিলজফার স্টোন আর এলকেমি নিয়ে কিছু জেগেছি। প্রাচীনকালে এলকেমিকেই বোধহয় যাদুবিদ্যা বলা হতো। বইটি ম্যাজিক রিয়ালিজমের সফল উদাহরন। আমার ভালো লেগেছে। তবে খুব আহামরী ভালো লাগেনি। শুরু বোরিং লেগেছে। ফিনিসিংটা “ওয়াও” লেভেলের। আর মজার ব্যাপার হলো, এটাকে ফালতু যারা বলেন, তারা ম্যাজিক রিয়ালিজম জনরাকে অপছন্দ করেন।
পাঠ প্রতিক্রিয়াটি লিখেছেনঃ Amirul Abedin Akash