চন্দ্রনাথ মন্দির এবং গুলিয়াখালি সী বিচ

0
গুলিয়াখালি সী বিচ
গুলিয়াখালি সী বিচ

কোথা হতে আসিয়াছি, নাহি পড়ে মনে
অগণ্য যাত্রীর সাথে তীর্থদরশনে
এই বসুন্ধরাতলে! লাগিয়াছে তরী
নীলাকাশ সমুদ্রের ঘাটের উপরি।

চন্দ্রনাথ মন্দিরঃ রাতের প্ল্যান ছিল। সো সকাল সকাল উঠেই নাজিরহাটের ট্রেনে শহর। আই মিন চট্টগ্রাম, বটতলী স্টেশন। সেখানে এসে দেখি ১০টায় একটিমাত্র ট্রেন আছে যেটা সীতাকুণ্ড স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিবে। সে অনুযায়ী ৩ নাম্বার প্লাটফর্ম হতে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ঘন্টা খানেকের মধ্যেই সীতাকুন্ড স্টেশনে পৌঁছে যায়। টিকিট চেকার এবং আমরা ৫ জন ৩০ টাকাতেই খুশি ছিলাম। সো সীতাকুন্ড স্টেশন/বাজার পর্যন্ত আসতে আমাদের খরচ ছিল পার হেড ৬টাকা!!
চন্দ্রনাথ মন্দির এবং গুলিয়াখালি সী বিচ
সেখান থেকে ৫০টাকায় অটো করে চন্দ্রনাথ পর্বতমালার পাদদেশে। এখানে লাঠি পাওয়া যায় ভাড়া ১০ টাকা করে। নিয়ে নিলেই ভাল, আবার পাহাড়ের ভিতরেও পাওয়া যায়। আপনাদের ইচ্ছা। ঝরনার মতো একটা আছে শুরুতেই, যদিও ঝরনা না, পানির পাইপ ফুটো হয়ে পানির ধারা বইছে জাস্ট। সেখান থেকেই দুটো পথ আলাদা হয়েছে। বামদিকের পথ উপরে উঠার জন্য, ডানদিকের টা নামার সময়ের জন্য। ভুলেও ডানদিকের পথে উঠতে যাবেন না। একটি ভুল সারাদিনের কান্না হয়ে যাবে!
আর কিছু বলছিনা, সেগুলো নিজেরাই না হয় দেখে নিয়েন 😉
চন্দ্রনাথ মন্দির এবং গুলিয়াখালি সী বিচ
আমরা পাহাড় থেকে নেমে এসেছি ৩ঃ৩০ এর নাগাদ। সেখান থেকে আবারো অটো করে ৫ জনে ৫০টাকায় স্টেশন। স্টেশনের ওইখানে নেমে ৫ মিনিট হাটলেই সীতাকুন্ড বাজার। এখানেই দুপুরের খাবার খেয়ে বেড়িয়ে পড়ুন বাংলাদেশের সুন্দরতম সমুদ্রসৈকত – গুলিয়াখালি সী বিচের উদ্দেশ্যে!

গুলিয়াখালি সী বিচঃ সীতাকুন্ড বাজারের নামা বাজার নামক সিএনজি স্টেশন থেকে সিএনজি রিজার্ভ ১০০টাকা। পার হেড ২০টাকা।

গুলিয়াখালি সী বিচ
গুলিয়াখালি সী বিচ

অনিন্দ্য সুন্দর গুলিয়াখালি সী বিচ! সবুজ ঘাসের বিছানা, এরই ফাঁকেফাঁকে মাথা উঁচু করে আছে ছোট ছোট শ্বাসমূল। বিকালে, জোয়ারের সময় ভরা যৌবন পায় এই সী বিচ। সমুদ্র নামক যুদ্ধের ময়দানে সৈকতের সৈনিকের মতো দাঁড়িয়ে থাকে গাছগুলো! অসাধারণ লাগে তখন। মনে হয় কয়েক যুগ বসে থাকি এই বিচে, সবুজ ঘাসের উপরে।
গুলিয়াখালি সী বিচ
ফেরার সময় সিএনজি ছিল না বলে বাড়তি আরো ২০টাকা বেশি নিয়েছিল ড্রাইভার ভাই। মানে ১২০টাকা, নামা বাজার পর্যন্ত। সেখান থেকে হেঁটে রেল স্টেশন। সন্ধ্যা ৭টায় চিটাগাং আসার লোকাল ট্রেন থাকে। আপনারা সেটা দিয়ে ফিরতে পারবেন চিটাংয়ে।

তাহলে খরচ হচ্ছে প্রতি জনে (৬+১০+১০+১০+২০+২৪+৬)= ৮৬ টাকা। খাওয়া ছাড়া।

সতর্কতাঃ পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি, স্যালাইন, হালকা খাবার,কলা নিয়ে যাবেন প্রত্যেকের কাঁধ ব্যাগে। ব্যাগ যতটা সম্ভব হালকা রাখতে চেষ্টা করবেন। আর দলছাড়া করবেন না কাউকে।

জায়গায় জায়গায় পানির বোতল পড়ে থাকতে দেখেছি। চলুন ধারণ করি এই কথাটি ‘Things of beauty need to be honored.’

লেখকঃ Shafiqur Rahman