ঘুরে আসুন গৌরবের প্রতীক স্মৃতিসৌধ

0
স্মৃতিসৌধ

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল বিজয়ের অসামান্য রূপকার বীর শহীদদের স্মরণে জাতির শ্রদ্ধা নিবেদনের চিরন্তন প্রতীক জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
জাতীয় স্মৃতিসৌধ রাজধানী ঢাকা থেকে ৩৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সাভার উপজেলায় অবস্থিত। এখানে ৪৪ হেক্টর জায়গা নিয়ে স্থাপন করা হয়েছে বিশাল স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্স। একাত্তরের ডিসেম্বরে চূড়ান্ত বিজয়ের আগ মুহূর্তে সাভারে দখলদার পাকিস্তানি হানাদারদের সাথে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত বিজয়,তাদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগ স্মরণ করে সাভারে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
স্মৃতিসৌধ
৫৭টি নকশার মধ্য থেকে স্থপতি সৈয়দ মইনুল হোসেনের নকশাকে সেরা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। ১৯৮২ সালের কিছু পর স্মৃতিসৌধের মূল কাঠামো, কৃত্রিম লেক এবং উদ্যান তৈরির কাজ সমাপ্ত হয়। এটি পরিণত হয় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জাতীয় প্রতীকে।

সৌধের মূল কাঠামো সাত জোড়া ত্রিভূজাকৃতির দেয়াল নিয়ে তৈরি হয়েছে। মাঝখানের দেয়ালটি দৈর্ঘ্যে সবচেয়ে ছোট কিন্তু উচ্চতায় সবচেয়ে বেশি। সৌধের সর্বোচ্চ বিন্দুটি ১৫০ ফুট উঁচু।

পুরো কমপ্লেক্সে রয়েছে কৃত্রিম জলাশয়, বাগান এবং গণকবর। স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্সের গণকবরগুলোতে সাভার অঞ্চল ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সেনা ও বিহারীদের গণহত্যার শিকার শহীদদের চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। জাতীয় স্মৃতিসৌধের ঠিক সামনেই রয়েছে একটি জলাশয়, যাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের মূল কাঠামো এবং জাতীয় পতাকার প্রতিবিম্ব দেখা যায়। এই জলাশয়ে ফুটে থাকে জাতীয় ফুল শাপলা।

স্মৃতিসৌধটি সাত জোড়া ত্রিভুজের সমন্বয়ে গঠিত। এই সাত জোড়া দেয়াল স্বাধীনতা সংগ্রামের সাতটি ভিন্ন ধাপ নির্দেশ করে। পর্যায়গুলো হলো :

ক.১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন।

খ. ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন।

গ. ১৯৫৬ সালের শাসনতন্ত্র আন্দোলন।

ঘ. ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন।

ঙ. ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন।

চ. ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং

ছ. ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ।

সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রবেশের জন্য কোন প্রবেশ মূল্য নেই। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এটি খোলা থাকে।

কীভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকে স্মৃতিসৌধে সরাসরি যাওয়ার জন্যে রয়েছে বিআরটিসি বাস সার্ভিস, যা মতিঝিল-গুলিস্তান থেকে শাহবাগ, ফার্মগেট, আসাদগেট, শ্যামলী, গাবতলী, সাভার হয়ে স্মৃতিসৌধে যায়। এছাড়াও মতিঝিল ও গুলিস্তান থেকে হানিফ, নন্দন সুপার বাস ও গ্রীনওয়ে বাস সার্ভিস সরাসরি নবীনগর পর্যন্ত যাতায়াত করে। এছাড়া মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ছেড়ে আসা তিতাস পরিবহন মিরপুর ১০, মিরপুর ১, টেকনিক্যাল মোড়, গাবতলী, সাভার হয়ে স্মৃতিসৌধে যায়।

তবে আর দেরী কেন? চলে আসুন জাতীয় স্মৃতিসৌধে, উপলব্ধি করুন বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল জন্ম ইতিহাসের মাহাত্ম্য।

RAAD

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে