ঘুরে আসুন বাংলাদেশের অত্যন্ত সুন্দর স্থান, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচর

0
চরফ্যাশন

বাংলাদেশের অত্যন্ত সুন্দর স্থান, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচর।
চরফ্যাশন
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সজ্জিত ঢালচর মূলত একটি ইউনিয়ন দ্বীপ, যার বিশাল একটি অংশ ম্যানগ্রোভ বন, পশ্চিমে দৃষ্টিনন্দন তারুয়া সৈকত। এখানকার পশু চারণভূমি দেখলে মনে হবে, বিশাল আকারের কোন গলফ মাঠ।

চাইলে নিরালায় কয়েকটা দিন এই দ্বীপে কাটিয়ে আসতে পারেন। যারা ক্যাম্পিং করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য ঢালচর একটি আদর্শ স্থান।
চরফ্যাশন
কিভাবে যাবেন?
ঢাকার সদরঘাট থেকে ফারহান ৫ অথবা ৬ এবং তাশরিফ ৪ অথবা ৩ একই দিনে যথাক্রমে সন্ধ্যা ৭টা ৪৫মিনিটে এবং রাত ৮টা ৩০মিনিটে বেতুয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ডেক ভাড়া জনপ্রতি ১৫০টাকা মাত্র।
বেতুয়া লঞ্চঘাট থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা করে চরফ্যাশন উপজেলা। ভাড়া জনপ্রতি ৩০টাকা।
চরফ্যাশন থেকে বাসে করে চর দক্ষিণ আইচা। ভাড়া জনপ্রতি ৩০টাকা।
চর দক্ষিণ আইচা থেকে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় কচ্ছপিয়া ঘাট। ভাড়া জনপ্রতি ১০টাকা।
(আপনি চাইলে বেতুয়া লঞ্চঘাট থেকে মোটর সাইকেল ভাড়া করে সরাসরি কচ্ছপিয়া ঘাট চলে আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে এক মোটর সাইকেলে যাত্রী হিসেবে ২জন চড়তে পারবেন। ২জনের রিজার্ভ ভাড়া ২৫০টাকা।)
কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে বিকেল ৩টায় সারাদিনে মাত্র ১টি লঞ্চ ঢালচরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি ৭০টাকা।
সূর্যদয়

সূর্যদয়
কি কি দেখবেন?
তারুয়া সৈকত, ম্যানগ্রোভ বন, গো চারণভূমি, জেলে নৌকায় চড়ে মৎসাভিযান, বনের মহিষ, শেয়ালের হুক্কা-হুয়া কোরাস, হাজারও অতিথি পাখি, দ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে “সিমেট্রি বীচ”(এই নামটা আমাদের গ্রুপের পক্ষ থেকে দেয়া। অন্য কোন দিন এর ঘটনা ব্যাখ্যা করবো)।
ট্রলার
ঢালচর
ঢালচরে কি খাবেন?
মহিষের দুধের ছানা ঢালচরের বেশ ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার। তাছাড়া পাবেন, মহিষের দুধে তৈরি দই, রসগোল্লা। প্রাণভরে সামুদ্রিক মাছ খেতে পারেন। রূপালী ইলিশ, খালের টাটকা গলদা চিংড়ী, জালি ডাব, নারকেল দিয়ে রান্না করা কাঁকড়া, খেজুরের রস ইত্যাদি।
ডাব
ডাব
ইলিশ
থাকবেন কোথায়?
ঢালচরের স্থানীয় মানুষজন খুবই অতিথিপরায়ণ। আপনি চাইলে এমন কোন পরিবারের সাথে কথা বলে তাদের সাথে থাকতে পারেন। তাছাড়া ঢালচর বাজার ঘাটে ইউনিয়ন পরিষদের একটি গেস্ট হাউজ আছে। পূর্বানুমতি নিয়ে এখানেও থাকতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয়, ক্যাম্প করে থাকলে। এটা বেশ মজার এবং এডভেঞ্চারের দুর্দান্ত স্বাদ পাওয়া যায় এতে।
ক্যাম্প
খরচা পাতি (ঢাকার সদরঘাট থেকে)
১৫০+৩০+৩০+১০+৭০=২৯০টাকা। আসা যাওয়া ৫৮০টাকা মাত্র।


খাওয়া দাওয়া করবেন নিজের পছন্দ অনুযায়ী।
ঢাকা থেকে আমরা ৮জনের টিম গিয়েছিলাম। বাসা থেকে আসা যাওয়া সহ ৪দিন ৫রাত ছিল আমাদের এডভেঞ্চারের সময়কাল।
বেতুয়া লঞ্চঘাট থেকে আমরা ৪টি মোটর সাইকেল রিজার্ভ করে কচ্ছপিয়া ঘাট পর্যন্ত সার্ভিস নিয়েছিলাম ১২০০টাকায়। ঢালচর ঘুরে বেড়াবার উদ্দেশ্যা একদিনের জন্য আমরা কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে মাছধরা ট্রলার ভাড়া নিয়েছিলাম, ৪৫০০টাকায়। তাঁবু করে থেকেছি। নিজেরা রান্না করে খেয়েছি। স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী খাবারও পরখ করে দেখেছি। সর্বসাকুল্যে আমাদের খরচ হয়েছে, জনপ্রতি ২২৭০টাকা মাত্র।
আপনি স্থানীয় সার্ভিস নিলে এটা ২০০০টাকার কমে নিয়ে আসতে পারবেন।
#হ্যাপী_ট্র্যাভেলিং

লেখকঃ শহীদুল সারোয়ার সোহেল

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে