দেখে পার হবেন রাস্তা : পাঠ প্রতিক্রিয়া

0
সোহাগিনীর সাথে এক বছর

বইঃ দেখে পার হবেন রাস্তা
লেখকঃ সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়
পৃষ্ঠাঃ ৮০
অন্তর্ভুক্তিঃ দেশ শারদীয়া সংখ্যা ১৪১৪
আলাদা প্রকাশনঃ আনন্দ পাবলিশার্স
দেখে পার হবেন রাস্তা

নারায়ণগড় এর বিধায়ক তমাল মুখার্জী। আকৈশোর কমিউনিস্ট মতবাদের সাথে হাতেখড়ি, সেই বাবার সময় থেকে। এখন একজন এম এল এ। নারায়ণগড়ে তার বিপুল সুনাম। এই সুনামে কোনো ভাটা নেই। বিরোধীদলীয়রাও তাকে কোনো খারাপ কথা বলতে পারেন না। যা কিছু নিন্দা সবকিছুই মুলত পার্টির খাতিরে। কমিউনিজম অধিভুক্ত অঞ্চলটুকু বেশ এই রাজ্যে বেশ ক্ষমতাবান। যাহোক, হুট করেই একদিন তমালের স্ত্রী শান্তা আত্নহত্যা করতে চেষ্ট করে। সেখান থেকেই উপন্যাসের শুরু। পার্টির ভাবমুর্তি নষ্ট হতে পারে, কারন অতি দ্রুতই নির্বাচন। তাই তমালকে চলে যেতে হবে হাইডে। হাইডের জন্য প্রাক্তন এক কমরেডের বাড়িতে ঠায় হলো। সেখানে নিচতলায় মা মল্লিকা ও মেয়ে পায়েল থাকে।

পায়েলের অনীক নামে এক ছেলের সাথে প্রেম, মল্লিকা মেয়ের বিয়ে নিয়েই চিন্তিত। এমন সময় তমাল ওপরের পার্টি অফিসে থাকাকালীন সময় হুট করে মল্লিকা পার্টির কাজে নেমে পরে। অন্যদিকে অনীক আবার দুরের এক প্রাইভেট অফিসে চাকরী নিয়েছে। পায়েলকে একটু এড়িয়েই চলে। তমাল এখন হাইডে, শান্তা বা তার ছেলে সুর্য্য এর সাথে কথাই হয়না। সে নিজেও এলাকার আন্দোলনে নেমে পরে। কিন্তু এই সময় হঠাৎ তার মনে পরে সেই যৌবনকালে এক সময় হাইডে থাকার কথা। এক কমরেড ত তার সামনেই খুন হলো। কিন্তু একটা অদৃশ্য সুতো কোথাও ঝুলে আছে, এটা কি? এই মজাটুকুই ত পাঠককে নিতে হবে বইটি পড়ে।

উপন্যাসটির নামকরণ আর এর যৌক্তিকতা উপন্যাসটি শেষ না করে কেউ বুঝবেন না। প্রথমত, কিছু উপন্যাস আছে যেগুলোকে সরাসরি রাজনৈতিক উপন্যাস বলা যায়না এর প্রধান কারন রাজনৈতিক উপন্যাস রাজনীতির পোষ্টমর্ডেম করে দেয়। যেটা “কালবেলা” পড়লে বোঝা যায়। কিন্তু এই উপন্যাসটি মুলত আমাদের রাজনীতির আদর্শ বুকে ধারনকারী মানুষদের পরিচয় দেয়। কিছু কিছু মানুষ আছে যারা আগ বাড়িয়ে এগোয়। একই সাথে একটি সুন্দর পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক পটভুমিকা, ব্যক্তিমনের দ্বন্দ্ব, ব্যক্তি আক্রোশ, ছলনা, রাজনৈতিক মারপ্যাচ ইত্যাদি খুব সুক্ষ্মভাবে উঠে এসেছে। তবে এখানে কোথাও মনে হয়নি খুব মোটা দাগে তিনি বিশ্লেষন করেছেন। আমার ভালো লেগেছে। অতি অসাধারন বলবো না। কিন্তু ভালো লেগেছে। ফিনিসিং এ একটু টুইস্ট লেখক দিয়েছেন, তবে সেটা অনুমানযোগ্য, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের মত টুইস্ট আশা করেছিলাম। তবে তৃপ্তিদায়ক ফিনিসিং। ওভার-অল চরিত্রগুলোর স্থানায়ন চমৎকার ছিলো, কোনো চরিত্রকেই একদম কেন্দ্রিয় বলে ফুটিয়ে তুলেন নি। সবগুলো চরিত্রই প্রাধান্য পেয়েছেন।

পাঠ প্রতিক্রিয়াটি লিখেছেনঃ Amirul Abedin Akash‎

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে